আপনজন ডেস্ক: ফের গুজরাত বিধানসভায় বিজেপি ক্ষমতায় এল। কিন্তু বিজেপির সেই মধুর জয়ে কাঁটা হয়ে বিঁধে রইল হিমাচল প্রদেশ। পার্বত্য এ রাজ্যে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করে নিল কংগ্রেস। এ সাফল্য কংগ্রেসের কাছে একঝলক তৃপ্তির বাতাস।
বৃহস্পতিবার হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে মোট ৬৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ৪০টি আসনে জয়লাভ করে যা গতবারের চেয়ে ১৯টি বেশি। বিজেপি ২৫-এ গিয়ে থমকে গিয়েছে। তিনটি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা।
এদিকে হারের খবরে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর দুপুরেই জানিয়ে দেন জনতার রায় মেনে পদত্যাগ করছেন। প্রতি পাঁচ বছর শাসক বদলের যে ঐতিহ্য রাজ্যটি ধরে রেখেছিল, বিজেপির প্রবল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তার অন্যথা হল না। রাজ্যবাসী খারিজ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ তত্ত্ব। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর গণমাধ্যমকে বলেন, আমি জনগণের রায়কে সম্মান করি। রাজনীতি যাই হোক না কেন, আমরা রাজ্যের উন্নয়নের পক্ষেই থাকব। আমরা আমাদের ত্রুটিগুলিও বিশ্লেষণ করব এবং পরবর্তী মেয়াদে আরও উন্নতি করব। উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সুরেশ ভরদ্বাজ, রাম লাল মার্কন্ডা, সর্বীন চৌধুরী, রাকেশ পাঠানিয়া, গোবিন্দ ঠাকুর, বীরেন্দ্র কানওয়ার এবং রাজীব সাইজল সহ বিদায়ী মন্ত্রীদের মধ্যে অনেকেই নির্বাচনে হেরে যান। বিশিষ্ট বিজয়ী কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক থেকে রাজনীতিবিদ মুকেশ অগ্নিহোত্রী হারোলি থেকে চতুর্থবারের মতো জিতেছেন। এছাড়া জিতেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান সুখবিন্দর সিং সুখু, প্রাক্তন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী সুধীর শর্মা, রাজেন্দ্র সিং রানা, কর্নেল ধনি রাম শান্ডিল, বিক্রমাদিত্য সিং যিনি ছয়বারের মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংয়ের পুত্র।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি ৪৪ টি আসন এবং কংগ্রেস ২১ টি আসন জিতেছিল, আর একটি আসন সিপিআইএম এবং দুটি নির্দল প্রার্থীরা জিতেছিলেন। ভোটের ফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেন, হিমাচল প্রদেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই বিজেপির প্রতি স্নেহ ও সমর্থনের জন্য। রাজ্যে প্রচার না করা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের জয়ের জন্য ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই নির্ণায়ক জয়ের জন্য হিমাচল প্রদেশের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সমস্ত কংগ্রেস কর্মী ও নেতাদের আন্তরিক অভিনন্দন। আপনার কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা সত্যিই এই বিজয়ের জন্য শুভকামনার যোগ্য। আমি আপনাদের আবারও আশ্বস্ত করছি, জনগণকে দেওয়া প্রতিটি প্রতিশ্রুতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূরণ করা হবে,” বলেন তিনি।
পারিবারিক উত্তরাধিকার এবং অবদানের কথা বিবেচনা করে, প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান প্রতিভা সিং তার স্বামী বীরভদ্র সিং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তার ছয় মেয়াদে পরিচালিত উন্নয়নের উপর বিধানসভা নির্বাচনে ভোট চেয়েছিলেন। প্রতিভা সিং যিনি বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি, তাকেও সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কংগ্রেস মহলে নাম মোনা যাচ্ছে। তবে, হিমাচলে কংগ্রেসের এই সাফল্যে পিছনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধির কথা সামনে আসছে। হিমাচল বিধানসবা নির্বাচেন কংগ্রেসের দায়িত্বে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, হিমাচল প্রদেশে ২.১ শতাংশ মুসলমান। একমাত্র রমজান আজাদ নাহান বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে ১১৮টি ভোট পেয়েছেন। তবে, জনসখ্যার ১.৬ শতাংশ বিশিষ্ট শিখ সম্প্রদায থেকে দুজন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct