আপনজন ডেস্ক: কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে বিজেপির আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় খানিকটা বেসুরো হয়েছিলেন। যদিও তখন বোঝা যায়নি তিনি রাজনীতি থেকে তিনি সরে দাঁড়াবেন। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে বাবুল সুপ্রিয় নিজেই ঘোষণা করলেন, বিজেপি ও সাংসদ পদ আলবিদা। দুবারের বিজেপি সাংসদ অবশ্য জেনে বুঝেই ফেসবুকে লিখলেন, চললাম, আলবিদা। সবার সব কথা শুনলাম - বাবা, (মা) স্ত্রী, কন্যা, দুএকজন প্রিয় বন্ধুবান্ধব.. সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেই বলি, চললাম...।
বাবুল সুপ্রিয় আরও জানালেন, ঠিক যেভাবে ১৯৯২ সালে স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়েছিলেন, ঠিক সেভাবে তিনি সাংসদ পদ সহ রাজনীতি ছাড়লেন। তবুও প্রকৃত রহস্য কিছুতেই সামনে আসছে না। বাবালু সুপ্রিয় খুব কৌশলভাবে রাজ্যের তরুণ তুর্কি বিজেপি নেতাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি সম্মান জানানোর কথা ব্যক্ত করেছেন ফেসবুকে। তার মধ্যেই তিনি বরণে, ‘বেশ কিছু সময়ে তো থাকলাম’.. কিছু মন রাখলাম কিছু ভাঙলাম.. কোথাও আপনাদের হয়তো আমার কাজে খুশি করলাম, কোথাও নিরাশ হতাশ করলাম। মূল্যায়ন আপনারাই নয় করবেন। আমি ‘আমার’ মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরই বলছি.. আমার মতো করেই বলছি...চললাম...।’
এই চলে যাওয়ার পিছনে কি বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন চূর্ণ হওয়াটা কাজে লেগেছে, তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে। তার মনে প্রশ্ন জেগেছে, তারা তৃণমূলকে সরানোর জন্য নিবেদিত প্রাণ হলেও বিজেপি বাংলা দখল করার প্রচারটা ছিল শুধুই গিমিক।
সেই হতাশা ও আর ক্ষোভ থেকেই এই ইস্তফার মনোবাসনা বলে মনে করা হতে পারে। ফেসবুকে তার বক্তব্য থেকেই তা পরিষ্কার হয়ে উঠছে।
বাবুল লিখেছেন, ‘আকাশে, একটি উড়ানে স্বামী রামদেবজীর সঙ্গে একটা ছোট কথোপকথন হয়েছিল। একদমই ভালো লাগেনি যখন বুঝেছিলাম যে বাংলাকে বিজেপি খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছে, শক্তির সাথে লড়লেও কিন্তু বোধহয় কোনো আসন আশা করছে না। মনে হয়েছিল, যে বাঙালি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী, অটল বিহারী বাজপেয়ীকে এত শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে, সেই বাঙালি বিজেপিকে একটাও আসনে জেতাবে না এটা কি করে হতে পারে !!! বিশেষ করে সারা ভারত যখন ভোটের আগেই ঠিক করে ফেলেছিল যে তাঁদের যোগ্য উত্তরসূরি, মাননীয় শ্রী নরেন্দ্র মোদিই ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হবেন, তখন বাংলা কেন অন্যরকম ভাববে। চ্যালেঞ্জটা একজন বাঙালি হিসেবে তখনই নেওয়া উচিত বলে মনে হয়েছিল। তাই সবার কথা শুনেছি কিন্তু নিজের যা মনে হয়েছিল তাই করেছি - অনিশ্চয়তাকে ভয় না পেয়ে নিজে যা ঠিক মনে করেছি, ‘মন-প্রাণ’ দিয়ে করেছি।’ বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাদের মনোভাবের জন্য কি বাবুল তিতিবিরক্ত হয়েছেন সেই প্রশ্ন রয়েই গেল বাবুল সুপ্রিয়র ইস্তফায়। তবে তিনি যে আর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না তা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। পরে অবশ্য সেই ফেসবুক পোস্ট তিনি সরিয়ে ফেলেন। তাই অনেকে মনে করছেন রাজনীতির অঙ্গন থেকে বাবুল সুপ্রিয় আবার সঙ্গীতের জগতে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct