আপনজন ডেস্ক: স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মৃত বেড়ে ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে টানা ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি শিলাবৃষ্টিও হচ্ছে, এতে বহু অঞ্চলজুড়ে বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মুষলধারে বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা দেয়। এতে সেতু এবং ভবনগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বেঁচে থাকতে মানুষ বাড়ির ছাদ কিংবা গাছে উঠতে বাধ্য হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। এখনো অনেক নিখোঁজ মানুষ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বুধবার জাতীয় ভাষণে নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পুরো স্পেন আপনাদের সাথে কাঁদছে। আমরা আপনাদের ত্যাগ করব না।
ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশে অন্তত ৯২ জন ও এর আশপাশে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এবারের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বেশি। ওই বছর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১৫০ জন মারা যান।
জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এইএমইটির মতে, ভ্যালেন্সিয়ার নিকটবর্তী শহরগুলোর একটি চিভায় মঙ্গলবার মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। এই সময় ৪৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে, যা এক বছরের বৃষ্টিপাতের সমান।
স্প্যানিশ সেনাবাহিনী এবং জরুরি সেবার সদস্যরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। আকস্মিক জলোচ্ছ্বাসে রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছ।
এদিকে, ভ্যালেন্সিয়ার পাশের শহর হর্নো দে আলসেডোর মেয়র জানিয়েছেন, কীভাবে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে পানির স্তর এক মিটারের বেশি বেড়েছে। তিনি বলেন, স্রোত খুব দ্রুত এসেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেম পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বন্যার পানি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, সেতু ভেঙে পড়ছে এবং রাস্তায় গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটি ভিডিওতে মানুষকে ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচতে গাছে আঁকড়ে থাকতে দেখা গেছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রেডিও এবং টিভি স্টেশনগুলো বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া লোকেদের কাছ থেকে সাহায্যের জন্য বা প্রিয়জনদের সন্ধান করার জন্য শত শত কল পেয়েছে বলে জানা গেছে। জরুরি পরিষেবাগুলো অনেক এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct