আপনজন ডেস্ক: আলেমদের প্রতি বরাবরই যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। আরো একবার তা প্রমাণিত হলো। মহানবী সা:-এর হাদিসের সংকলিত গ্রন্থ নিয়ে গবেষণার জন্য বিশ্ববরেণ্য মুহাদ্দিস শায়খ মোহাম্মদ আল-আওয়ামাকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছেন তিনি।গত শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত সুলায়মানি মসজিদে অনুষ্ঠিত এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে তাকে সম্মননা দেয়া হয়। সম্মননার স্মারক হিসেবে শায়খ আওয়ামার হাতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ‘আল-আসমাউল হুসনা’ লেখা একটি পদক তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেশটির ধর্মবিষয়ক প্রধান ড. আলী ইরবাশ, উচ্চশিক্ষাবিষয়ক প্রধান আরুল উজওয়ার, উপসাগরীয় উলামা পরিষদের সভাপতি আজিল আল-নাশমি, ইবনে খালদুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শায়খ মোহাম্মদ আওয়ামা কর্তৃক হাদিসবিষয়ক বড় দুটি গবেষণা শেষ হওয়ায় এই আয়োজন করে ইস্তাম্বুলের ইবনে খালদুন বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত অতীতের আলেমদের জ্ঞানচর্চার ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে সদ্যঃসমাপ্ত গবেষণাকে স্মরণীয় রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। গবেষণা দুটি হলো—এক. দীর্ঘ সাত বছর ধরে হাদিস বর্ণনাকারী সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ ‘তাদরিবুর রাবি’ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ, দুই. দীর্ঘ চার বছর ধরে প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ সুনানে তিরমিজির ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ। শায়খ মোহাম্মাদ আওয়ামার তত্ত্বাবধানে উভয় কাজ সম্পন্ন হয়।
হাদিসের গবেষণায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রশংসা করে এরদোগান বলেন, ‘সুনানে তিরমিজির ১২ খণ্ডের নতুন এ সংস্করণ হাদিসের শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে থাকবে। শায়খ মোহাম্মদ আওয়ামার নেতৃত্বে শিগগির ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সুন্নাহ অ্যান্ড রিসার্চ প্রতিষ্ঠিত হবে।’ তা গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। শায়খ মোহাম্মদ আল-আওয়ামার পূর্ণ নাম শায়খ আবুল ফজল মোহাম্মদ বিন আবদুল কাদির আওয়ামা আল-নুআইমি আল-হুসাইনি। পৈতৃক দিক থেকে তিনি ফাতেমা রা:-এর ছেলে হুসাইন রা:-এর বংশধর। ১৯৪০ সালের ২৫ জানুয়ারি সিরিয়ার হালব শহরের প্রসিদ্ধ নগরী বাবুল মাকাম নামক এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক পড়াশোনা তার পিতা শায়খ মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি স্থানীয় প্রবীণ আলেম শায়খ মোহাম্মদ আল-সালকিনির সাথে তার গভীর সুসম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর তিনি ১৯৫২ সালে হালবের বিখ্যাত আল-শাবানিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৬২ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক স্তর সম্পন্ন করেন।এরপর নিজ দুই ভাইয়ের সাথে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তবে নানা সমস্যার কারণে মাত্র দুই মাস পরই সেখান থেকে ফিরে আসেন। এরপর তিনি দামেশক বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদে ভর্তি হন এবং ১৯৬৭ সালে ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। মূলত এখানে তিনি সেই সময়ে বিখ্যাত আলেমদের সান্নিধ্য লাভ করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct