তানজিমা পারভিন, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য তিনটি সাবমার্সিবল পাম্প ও
একটি ফিল্টার মেশিন। তবে সেগুলো কোনও কাজের না। অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। অগভীর নলকূপের আয়রনযুক্ত জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন রোগী ও তাঁর পরিজনরা। এমনটাই অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে আসা মানুষজনের। সাবমার্সিবল মেরামতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। যদিও হরিশ্চন্দ্রপুর ১ এর বিডিও সৌমেন মণ্ডল সাবমার্সিবল গুলি মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লক এলাকার মানুষের চিকিৎসা পরিসেবার ভরসা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। প্রতিদিন বহু মানুষ হাসপাতাল ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন।বহু রোগী ভর্তি থাকেন।
তবে এই হাসপাতাল চত্বরে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে আসা এক রোগীর আত্মীয় শাহানাজ বিবি বলেন, হাসপতালে পরিস্রুত পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে টাকা খরচ করে দোকান থেকে জল কিনে পান করতে হচ্ছে। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে তিনটি সাবমার্সিবল দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বসানো জলের ফিল্টার মেশিনই একমাত্র ভরসা ছিল রোগী ও তাঁর আত্মীয়দের। তবে সেটিও তিন মাস ধরে বিকল হয়ে গিয়েছে। একটি অগভীর নলকূপের আয়রন যুক্ত জল পান করতে বাধ্য হচ্ছে রোগী ও তাঁর আত্মীয়রা। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বসানো সাবমার্সিবলগুলি বহুদিন থেকে বিকল হয়ে থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে রোগীর পরিজনদের। রোগী ও তাঁদের পরিবারের অভিযোগ,হাসপাতালে পরিস্রুত পানীয় জলেরও কোনও ব্যবস্থা নেই। হাসপাতাল চত্বরে একটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু তার জল মোটেও ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। রোগীদের সে জল খেতে নিষেধ করেন চিকিৎসকেরাই। অগত্যা বাইরে থেকে জল কিনতে হয়। না হলে বাড়ি থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু সকলের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। কুশিদা এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল আলি বলেন সম্প্রতি পেটের অসুখে ভর্তি হয়েছিলাম হাসপাতালে। ২০ কিলোমিটার দূরে বাড়ি থেকে বারবার জল নিয়ে আসা সম্ভব নাকি? বাইরে থেকে জল কিনতে গেলেও বিস্তর টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছিল। হাসপাতালে গিয়ে বিপদ ও ভোগান্তি দুই-ই বেড়ে গিয়েছিল। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ অমলকৃষ্ণ মণ্ডলকে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং মেসেজের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন,আমি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়িকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছি। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, আমাকে হাসপাতালে জলের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। শিঘ্রই জলের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জলের বিষয়টি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর দেখে। আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct