আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য একমাত্র নির্বাচন কমিশন দায়ী। বিশেষ করে যেভাবে বহিরাগতরা এ রাজ্যে এসে ভোটপ্রচার করছেন তার যেমন আপত্তি তুলেছিলেন মমতা, তেমনি বাকি কয়েক দফা ভোট এক দফায় করার আর্জি জানিয়েছিলেন। কারণ, যভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে তাতে লাগাম দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেসব কথায় কান দেয়নি। তার জন্যই মমতা রাজ্যে করোনা সংক্রমণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায় করেছিলেন। এবার নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলল মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট সোমবার বলল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য একমাত্র দায়ী নির্বাচন কমিশন। এর জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খুনের মামালা রুজু করা দায়ের করা উচিত। তাই এভাবেই এদিন ভোট প্রচারে কমিশনের উদাসীনতায় তীব্র ভর্ৎসনা করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্য করেন, ‘খুনের দায়ে কমিশনের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত। যখন ভোট প্রচার চলছিল, আপনারা কি ঘুমোচ্ছিলেন? কোভিড বিধি নিশ্চিত করতে পারেনি কমিশন।’
ভোট প্রচারের সময় করোনা বিধি শিকেয় ওঠায় মাদ্রাজ হাইকোর্ট চরম সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনের। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ভোট গণনায় করোনা বিধি আরোপে কমিশনের কী পরিকল্পনা? ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জমা দিক কমিশন। নয়তো ২রা মে’র ভোট গণনা বন্ধ করা হোক।’
মাদ্রাজ হাইকোর্টের বক্তব্য হল, এখন জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার। মানুষ বাঁচলে তবেই তো গণতিন্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হবে। এমনটাই পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন ওই বিচারপতি। তৃণমূল কংগ্রেস এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাদ্রাজ হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মাদ্রাজ হাইকোর্ট বলেছে নির্বাচন কমিশন দায় এড়াতে পারে না। সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন অনেকাংশ দায়ী। আমি এই রায়কে সমর্থন করছি।
এ প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, তিনি অনেকবার নির্বাচন কমিশনকে অনেকবার বলেছিলেন, বিভিন্ন দফার ভোটকে একসঙ্গে যোগ করে ভোট করানোর জন্য। কিন্তু কমিশন শোনেনি। কী করে শুনবে ওদের তো বিজেপি-র কথা শুনতে হবে। বিজেপি-র পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোট করাতে হবে। যদিও বিজেপি বলেছে দুর্ভাগ্যজনক। করোনার চেয়ে ভয়ঙ্কর হচ্ছে তৃণমূল।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে চিকিৎসক প্রত্যেকেই মাদ্রাজ হাই কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মন্তব্য, ‘এই পদক্ষেপ আগে হলে আরও ভালো হতো।’
একদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, অন্যদিকে তীব্র দাবদাহ। এই আবহে রাজ্যের ৫ জেলার ৩৪ আসনে নির্বাচন চলছে সোমবার। কলকাতার ৪টি, দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬টি, পশ্চিম বর্ধমানের ৯টি, মালদহের ৬টি ও মুর্শিদাবাদের ৯টি আসনে ভোট।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct