আপনজন ডেস্ক: পাঁচ শতাংশ অর্থনৈতিক উন্নতির পরিকল্পনা চীনের, ২০২৫ সালে এই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে চীন। ২০২৪ সালেও তারা একই পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বাস্তবে তা সফল হয়নি। একদিকে সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ অন্যদিকে ভূরাজনৈতিক প্রতিকূলতা, চীনকে গত কয়েক বছর ধরে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু তারা লক্ষ্যে অবিচল, চীনের আইনসভাকে সে কথাই আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০২৫ সালে পাঁচ শতাংশ অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে এই লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করা খুব সহজ নয়। চীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান লি কিয়াং পার্লামেন্টের প্রথম দিনের ভাষণে এই পরিসংখ্যান পেশ করেছেন। ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর চীনের সঙ্গে আমেরিকার নতুন স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়েছে। ট্রাম্প প্রথমে চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছিলেন। পরে তা বেড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে। চীন এই পদক্ষেপকে স্বাভাবিকভাবেই ভালো চোখে দেখেনি। আইনসভার অধিবেশনেও বিষয়টিকে কঠিন লড়াই হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। চীন কি পারবে মার্কিন প্রযুক্তিমুক্ত হতে? ট্রাম্প এমন সময় এই ঘোষণা করেছেন যখন দেশের ভিতরে চীনের জিডিপি ক্রমশ কমছে। বাজারে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে। এই পরিস্থিতিতে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে চীনের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক উন্নতি হতে পারে চার দশমিক ছয় শতাংশ। পাঁচ শতাংশে তা টেনে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। যদিও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সে কথা মানছে না। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তারা পাঁচ শতাংশ অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। অন্যদিকে সামরিক খাতেও বাজেট বৃদ্ধি করেছে চীন। ২০২৫ সালে বাজেট বাড়ানো হয়েছে সাত দশমিক দুই শতাংশ। বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরেই সামরিক খাতে বাজের বৃদ্ধি করছে চীন। তাদের সেনা বাহিনীকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। বস্তুত, ২০১৩ সাল থেকে হিসেব করলে গত ১২ বছরে সমারিক বাজেট দুই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শি জিনপিং দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনাবাহিনীর এই আধুনিকীকরণ শুরু হয়েছে।
চীনের সামরিক খাতে বাজেট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক। তাইওয়ান নিজেকে স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে দেখলেও চীন তা মানতে নারাজ। পার্লামেন্টের বিবৃতিতেও সে কথা বলা হয়েছে। তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আরও একবার ঘোষণা করা হয়েছে।
চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেটের অধিকারী। কিন্তু তার প্রধান কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি সরকারি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, বেইজিং চলতি বছর প্রতিরক্ষা খাতে ১ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (২৪৫.৭ বিলিয়ন ডলার) ব্যয় করবে। যা ওয়াশিংটনের বাজেটের এক তৃতীয়াংশেরও কম। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কয়েক দশক ধরে চীনের সামরিক বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct