কুতুবউদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: করোনা বিধি মেনে বিদ্যালয়ের সহৃদয় অটো চালক ও ক্যানিং থানার পুলিশের মানবিক উদ্যোগে হোমে ঠাঁই হল পরিবার ছেড়ে চলে যাওয়া এক বছর নয় বয়সের ভবঘুরে শিশুর।
পুলিশ ও ক্যানিং চাইল্ড লাইন সুত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার ঝিরঝির করে বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত তখন প্রায় ৮ বেজে ৫৮ মিনিট। সবে মাত্র ডাউন শিয়ালদহ-ক্যানিং স্টাফ স্পেশাল ট্রেন ক্যানিং ষ্টেশনের ১ নম্বর স্টেশনে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রচুর ট্রেনযাত্রীদের সাথে রাজা দাস নামে ওই শিশু ট্রেন থেকে নেমে ক্যানিং অটো স্ট্যান্ডে হাজীর হয়।রাতের অন্ধকারে লোকজনের ভিড় নেই দেখে ফুটপাথে বসে কাঁদতে থাকে। সেই মুহূর্তে বাপী বিশ্বাস নামে এক অটো চালকের নজরে পড়ে যায় ওই শিশু। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতেই ক্যানিং থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় ওই শিশুকে। ওই শিশুর বাবা-মা কোথায় সে জানেও না। পুলিশ কাকুদের সাথে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। বুধবার সকাল হতেই ওই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ‘ওই শিশুর বাবা বিষ্ণু দাস ও মা লক্ষী দাস বারুইপুর থানার অন্তর্গত পিয়ালীর পিন্টু নস্কর নামে জনৈক এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে ওই শিশুকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যায়। শিশুটি বড়ই একা হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাতে বাড়ির মালিক পিন্টু নস্কর পিয়ালী ষ্টেশন থেকে ওই শিশু কে ডাউন ক্যানিং লোকালে তুলে দেয়।ট্রেনটি ক্যানিং ষ্টেশনে এসে থামতেই ট্রেনের সমস্ত যাত্রী নেমে যে যার গন্তব্যে চলে যায়।
এরপর ওই শিশু আরো একাকী হয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে ট্রেন থেকে নেমে গুটি গুটি পায়ে হেঁটে ক্যানিং অটো ষ্ট্যান্ডে চলে যায় সে। সেখানে একা বসে কান্নাকাটি করছিল। ক্যানিং থানার পুলিশ বুধবার সকালে ওই শিশুটির সুরক্ষার জন্য ক্যানিং চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয়। শিশুটি যাতে সম্পূর্ণ ভাবে সুরক্ষিত থাকে তার জন্য ক্যানিং চাইল্ড লাইন শিশুটিকে হোমে পাঠায়।
ক্যানিং চাইল্ড লাইনের অন্যতম সদস্য বান্টী মুখার্জী জানিয়েছেন “আপাতত শিশুটির সুরক্ষার জন্য হোমে রাখা হবে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় ওই শিশুর পরিবারের লোকজনদের খোঁজ পাওয়া গেলে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” অন্যদিকে ক্যানিং থানার পুলিশ ওই শিশুর পরিবারের খোঁজ পেতে এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct