আপনজন ডেস্ক: গরীব থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে থ্যালাসেমিয়া সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা। এখন থেকে বারবার রক্ত দেওয়ার বদলে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের সাহায্যে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা সম্ভব। শনিবার কলকাতার টাটা মেডিকেল সেন্টারের প্রিমেসারায়া হলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত সুস্থ শিশুদের নিয়ে শিশু দিবস পালন অনুষ্ঠানে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশানের নানা সুযোগ সুবিধা তুলে ধরলেন চিকিৎসকরা।
একটা সময় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন ছিল। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বাইরে থেকে শরীরে রক্ত নিতে হতো। ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত জোগাড় করা এক সমস্যা ছিল। চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর চেষ্টা করতেন। এই সমস্যা দূর করতে বেশ কয়েক বছর ধরে চালু হয়েছে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একবার যদি রোগীর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন করা যায় তাহলে বারবার রক্ত বদলের কোন প্রয়োজন পড়বে না। আক্রান্ত শিশু পুরো সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। শনিবার কলকাতার টাটা মেডিকেল সেন্টারে এই ধরনের সুস্থ শিশুদের নিয়ে শিশু দিবসের আয়োজন করা হয়। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক শিশু জড়ো হয়। তাদের হাসি, গান এবং কলতানে ভরে ওঠে অনুষ্ঠান চত্বর। অনুষ্ঠানে থ্যালাসেমিক্স ইন্ডিয়া র সচিব শোভা তুলি বলেন, ভারত সরকারের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সঙ্গে কোল ইন্ডিয়া এবং বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে যাতে আর্থিকভাবে অনগ্রসর পরিবারে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দেওয়া যায়। এর জন্য গোটা দেশে ১৭ টি তালিকাভুক্ত হাসপাতাল আছে যেখানে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের গাইডলাইন অনুযায়ী কোল ইন্ডিয়া শিশুদের চিকিৎসায় ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেয়। এখনো পর্যন্ত গোটা দেশে ৬১০টির বেশি শিশুকে সাহায্য করা হয়েছে। তাদের পরিবার কোনদিন ভাবতেই পারেনি যে এই ধরনের রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব।
টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের নির্দেশক ডক্টর পি অরুন বলেন, থালাসেমিয়া জটিল রোগ হলেও এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। থ্যালাসেমিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিজিত নাগ জানিয়েছেন, কম বয়সী শিশুদের বোনমারো ট্রান্সপ্লান্টেশনে মাধ্যমে চিকিৎসা করা হলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। এর জন্য চাই সচেতনতার প্রসার।
এই ধরনের চিকিৎসা খরচ সাপেক্ষ হলেও অনেক সংস্থা এর জন্যে অনুদান দিয়ে থাকে। এই প্রতিস্থাপনের জন্যে যার রক্ত থেকে বোনম্যারো নেওয়া হয় তার কোনো রিস্ক থাকে না। স্থানীয় বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি বলেন, টাটা মেডিক্যাল সেন্টার যে কাজ করছে তা প্রশংশাযোগ্য। এদিনের অনুষ্ঠানে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশানের পর তাদের শিশুরা কেমন আছে সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ছোটো শিশুদের বাবা মায়েরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct