আপনজন ডেস্ক: হুগলির ডানকুনিতে শনিবার থেকে শুরু হল রাজ্য সিপিআইএমের ২৭তম রাজ্য সম্মেলনে। এই সম্মেলনে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষক বক্তৃতা দেন সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাত। প্রকাশ কারাত একদিকে যেমন তরুণ প্রজন্মকে দলে টানতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলেন তেমনি দেশে সাম্প্রদায়িক অরাজকতা সৃষ্টিতে নিশানা করেন বিজেপি আরএসএসকে।
প্রকাশ কারাত বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলি বৃহত্তর ঐক্যের জন্যই জরুরি। কিন্তু সিপিআইএমের স্বাধীন শক্তি বৃদ্ধি ও বামপন্থীদের শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি রয়েছে ৷ আরএসএস-এর সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ এখন দেশের নানা প্রান্তে জনভিত্তি পেয়েছে ৷ এই আদর্শের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সিপিআইএমের স্বাধীন শক্তি ও বামপন্থীদের শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি িনয়ে বলতে গিয়ে বিজেপি আরএসএসকে নিশানা করে বলেন, ভারতে বিজেপি আরএসএস বাংলাদেশের ঘটনা ঘিরে যে প্রচার করছে তা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাঁচাতে নয়, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের আক্রমণ করতে। তৃতীয় দফায় সরকারে আসীন হয়ে মোদি সরকার ভারত রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ব কায়েম করার কাজে এতটুকুও খামতি রাখেনি।
চারদিন ধরে অনুষ্ঠিতব্য সিপিএমের এই রাজ্য সম্মেলনের প্রথম দিন শনিবার এ রাজ্যে সিপিএমের অগ্রগতি কেন থমকে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কেরলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বুঝিয়ে দেন, দলে তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা অনেকটা পিছিয়ে। আর সেই সমালোচনার সাক্ষী থাকলেন মহম্মদ সেলিম, সূর্য্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীর মতো নেতারা। প্রকাশ কারাত বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম তরুণ কর্মী বাড়াতে পারেনি। ছাত্র যুব আন্দোলনে আমরা যুবকদের একত্র করছি। কিন্তু, দলের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারিনি। সেদিক থেকে কেরল অনেকটাই এগিয়ে। সেখানে মোট পার্টি সদস্যের ২২ শতাংশের বয়স ৩১ বছরের নীচে। তবে, গণ আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক আরজি কর আন্দোলনে বামপন্থীদের ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান প্রকাশ কারাত। অপরদিকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল বিজেপির সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, এরাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল দুয়ের বিরুদ্ধেই বামপন্থীদের লড়াই করতে হচ্ছে ৷ কারণ এরাজ্যে দুর্নীতি–ক্রিমিনাল শাসন চলছে ৷ বামপন্থী কর্মীরা হিংসাত্মক আক্রমণের মুখে পড়ছে ৷ তার মধ্যেও বিগত তিন বছরে এরাজ্যে সিপিআই (এম) শ্রেণি ও গণসংগ্রাম সংগঠিত করতে অগ্রগতি ঘটিয়েছে। বিশেষত আরজি কর আন্দোলনে বামপন্থীদের ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানা তিনি। এদিনের সম্মেলনে খসড়া রাজনৈতিক সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রাজ্য সম্মেলনে সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার, বৃন্দা কারাত, সূর্যকান্ত মিশ্র, তপন সেন, অশোক ধাওয়ালে, নীলোৎপল বসু, রামচন্দ্র ডোম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct