আহমদ মতিউর রহমান, ঢাকা : আসছে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। শাসক দল আওয়ামী লীগ তাদের নেতা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ঘটা করে পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ কয়েকটি সার্কভুক্ত দেশের নেতাদের। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া একটি ঘোষণায় প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি(বিএনপি)সহ রাজনৈতিক দলগুলোর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পলিশের বড় কর্তার এ নির্দেশে দেশের রাজনৈতিক মহল হতভম্ব। ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ঢাকাবাসীকে চলাচল সীমিত রাখার অনুরোধ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অতিথিদের নিরাপত্তার স্বার্থে নগরে সভা-সমাবেশ না করারও অনুরোধ জানান পুলিশপ্রধান। পুলিশ সার্ভিস ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন পরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি। করোনার সময়ে আমাদের সঙ্গে পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যুক্ত হবেন। এটি আমাদের জন্য সম্মানের বিষয়। ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে ১৭ মার্চ েেক ২৬ মার্চ এই ১০ দিন শহরে প্রয়োজন না হলে চলাচল সীমিত রাখতে। ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদান করা আমাদের রাষ্ট্রীয় কর্তব্য, দেশের কর্তব্য, জনগণের দায়িত্ব। যাঁরা আসছেন তাঁরা ১৮ কোটি মানুষের মেহমান। আমরা চাই জনগণ আমাদের এই মেহমানদের নিরাপত্তা প্রদানে সহায়তা করবে।’ আইজিপি বলেন, ‘ইতিমধ্যে এই ১০ দিন দেশবাসীকে আমাদের সহায়তা করার জন্য বলা হয়েছে। এই সময়ে যেকোনো প্রকার সভা-সমিতি করা থেকে বিরত থাকার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের প্রশ্ন পুলিশী পাহারায় তাহলে শাসক দল আওয়ামী লীগ একাই পালন করতে চায় স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী? অন্যান্য দলেরও তো দিনটি পালনের অধিকার আছে। তারা এখন কি ঘরে বসে থাকবে?
পুলিশের মাধ্যমে সরকারের চাপিয়ে দেয়া এই নির্দেশের কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা মানা সম্ভব নয়, কেননা ব্এিনপিসহ বিভিন্ন দলেরও স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী পালনের অধিকার রয়েছে। বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা আমরাও দিতে চাই। তারা যে পথ দিয়ে যাবেন সেগুলোতে নিরাপত্তা থাকলেই হল। অন্যান্যা স্থান, প্রেস ক্লাব বা বিভিন্ন মিলনায়তন বা দূরবর্তী সড়কে সভা কর্মসূচীতে বাধা দেয়া উচিৎ হবে না। আমরা এই নিদের্শনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এর বদল চাই। আরো কয়েকটি দলও একই মত দিয়েছে।
এছাড়া কয়েকটি বামদল, ছাত্র সংগঠন ও ইসলাম পন্থী দলের নরেন্দ্রে মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রেক্ষাপটেই আসলে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসব দলের বক্তব্য হচ্ছে হিন্দু চরমপন্থী দলের নেতা মোদির বাংলাদেশ সফরে এ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিনষ্ট হতে পারে। এছাড়া সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখে বাংলাদেশকে ফসল উৎপাদনে বাধাদানের মতো কাজগুলো করে চলেছে মোদি সরকার। যা এসব দল মেনে নিতে পারছে না। তারা পুলিশকে বাড়াবাড়ি না করার অনুরোধ জানিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct