আপনজন ডেস্ক: দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি দাপিয়ে বেড়ালেও শেষ হয়ে যায়নি সম্প্রীতি কিংবা ভিন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ শহরের এক অঙ্কন শিল্পী অনিল কুমার চৌহান। নিজে মুসলিম না হয়েও আরবি ক্যালিগ্রাফিতে দক্ষ অনিল। তাই মসজিদের কুরআনের আয়াত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে তার ডাক পড়ে। কোনও ধর্ম বিচার না করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও ৩০ বছরে কমপক্ষে ২০০ মসজিদের মেহরাব ও দেয়ালে পবিত্র কুরআনের আয়াত ও হাদিস লিখে চলেছেন হায়দরাবাদের বাসিন্দা অনিল কুমার। আর তা করে চলেছেন একেবারে বিনা পারিশ্রমিকে।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ পারিশ্রমিক নেওয়ার জন্য জোর করলেও চৌহান ইসলাম ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধায় তা ফিরিয়ে দেন। এ বিষয়ে অনীল কুমার চৌহান বলেন, যেকোনো ধর্মের উপাসনালয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করতে আমার ভালো লাগে। ভিন্ন এক প্রশান্তি অনুভব করি। এ জন্য এসব জায়গায় কাজ করে পারিশ্রমিক নেই না। আমার কাছে মসজিদ, মন্দির এবং গির্জার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। মসজিদে ক্যালিগ্রাফির কাজ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে বিরূপ পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে তাকে।
অনীল কুমার বলেন, একদিন হায়দরাবাদের এক মসজিদে কাজ করতে গেলে মসজিদ কর্তৃপক্ষের একজন আমি হিন্দু হওয়ায় মসজিদে প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না। আমি কাজ করব না–এ কথা না বলে হায়দরাবাদের প্রসিদ্ধ মাদ্রাসা জামিয়া নিজামিয়ায় চলে যাই। তারা আমাকে অজু করে পবিত্রতার সঙ্গে মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার ফতোয়া দেন। এরপরে ওই মসজিদে গিয়ে কাজ করে দেই।
হায়দরাবাদের প্রাচীন অঞ্চল চার মিনারের অদূরেই অনীল কুমারের ছোট একটি দোকান আছে। যেখানে তিনি আরবি, উর্দু, হিন্দি, তেলেগু এবং ইংরেজি ভাষায় সাইনবোর্ড লেখার কাজ করেন। তিনি অনলাইনের মাধ্যমেও হস্তলিপির কাজ পান। যার থেকে মাসে কমপক্ষে ২০-২৫ হাজার টাকায় উপার্জন হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct