জাহেদ মিস্ত্রী , বারুইপুর, আপনজন: এ বছর আল আমীন মিশনের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পৃথক পৃথকভাবে ‘আল-আমীন উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে আল আমীন মিশনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা এবং প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার এমনই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানা এলাকার সূর্যপুরে আল আমীন মিশনের ক্যাম্পাসে। এই ক্যাম্পাসে এদিন বিশিষ্টজন ও উজ্জ্বল প্রাক্তনীদের সম্মিলনে চাঁদের হাট বসে।
এদিনের ‘আল-আমীন উৎসব’ -এ আল আমীন মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম বলেন, আল্লাহ পাকের কাছ থেকে যে বার্তা টা এসেছিল যার মাধ্যমে দিয়ে তিনি এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স:) যাকে সকলে বিশ্ব নবী বলে জানে। সেই মানুষটার নামেই কিন্তু এই আল আমিন মিশন। আর এই আল আমিন মিশনের সামনে যেটা উদ্দেশ্য সেটা হচ্ছে এটাই যে আমরা সেই পারপাস টা সার্ভ করতে পারি যে জন্য আমরা পৃথিবীতে এসেছি।এই পারপাসটা সার্ভ করার উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল এই আল আমিন মিশনের পথ চলা। এবং সেই ভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি তার গলায় পরা উত্তরীয় দেখিয়ে বলেন, আমি যে উত্তরীয়টা পরে আছি তার মধ্যে যে লোগোটা আছে তার মধ্যে তিনটে শব্দ আছে শিক্ষা, সাম্য, শান্তি। এর উদ্দেশ্য এটাই ছিল যে আমরা যদি মূলবোধের শিক্ষা দিতে পারি, সত্যিকারের শিক্ষা যদি আমরা দিতে পারি তাহলে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ যুক্ত হবে। মানুষ যদি সবাইকে মানুষ হিসাবে ভালোবেসে সবাইকে সমান ভাবে দেখতে শেখে তাহলে সমাজে সাম্য আসবে।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যদি সমান ভাবে সবাইকে নিয়ে চলতে পারি সবাইকে নিয়ে থাকতে পারি তাহলে সমাজে গোটা দেশে পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করবে। শিক্ষায় আরও এগিয়ে যাওয়ার কথা বলে নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা যেখানেই থাকিনা কেন শুধু একা একা ভালো থাকব না সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করব। শুধু দুনিয়াতে ভালো থাকবো না, ঈমানকে সঙ্গে নিয়ে ভালো থাকবো যাতে ইনশাআল্লাহ আমাদের আখেরাতটাও মঙ্গলময় হয়। আমরা একই সাথে সবাই মিলে যাতে জান্নাতবাসী হতে পারি। পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কশিনের চেয়ারম্যান তথা পুবের কলম সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান বলেন, আল আমীন মিশন যখন শুরু হয়েছিল তখন রাজ্যে সংখ্যালঘুরা শিক্ষায় অনেক পিছিয়ে ছিল। পরবর্তীতে তা প্রকাশ্যে আসে সাচার কমিটির রিপোর্টে প্রকাশ হওয়া পর, যেখানে বলা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুরা শিক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে।
ইমরান বলেন, সেই পরিস্থিতি এখন পাল্টেছে। শুধু আল আমীন মিশন থেকেই বহু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হচ্ছে। এভাবেই আল আমীন মিশন সংখ্যালঘু শিক্ষার বিস্তারে বিশেষ ভূমিকা রচনা করছে।
এদিন অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সূর্যপুর মোহাম্মদ আলী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি তথা বিশিষ্ট লেখক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার মহিউদ্দিন সরকার, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদি কালাম প্রমুখ। বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিইবি ডি এস পি ড. মোহিত মোল্লা, বারুইপুর থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়, সূর্যপুর মোহাম্মদ আলী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ফাউন্ডার সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন মন্ডল, বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ইউনুস সরদার, সূর্যপুর এসবিআই ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সৈকত বিশ্বাস, সমাজসেবী শহিদুল হক মোল্লা, বাবলু মন্ডল, সালমান হালদার প্রমুখ।
প্রাক্তনীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ সাব ডিভিশন কন্ট্রোলার হাবিবুল্লা লস্কর, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহিন শেখ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শেখ আলমগীর, ধানবাদ আই এইচডি পিএইচডি রিসোর্ট স্কলার ওয়াসিম এনাম, বিদ্যুৎ পর্ষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আরিফুর রহমান সহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ও উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct