আপনজন ডেস্ক: কেউ প্রিয় সন্তানকে হারিয়েছেন। কেউ বা আবার আপনজনকে। কেউ হারিয়েছেন কাজ। আবার কেউ হারিয়েছেন বসত ভিটেটুকু। ইসরাইলি জল্লাদদের গত দেড় বছর ধরে চালানো তাণ্ডবে চোখের সামনেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতে দেখেছেন প্রিয় শহরকে। সামান্য প্রতিরোধটুকু গড়ে তুলতে পারেননি। তবে সব হারালেও সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপরে বিশ্বাস হারাননি গাজার বাসিন্দারা। তাই ধ্বংসের মাঝে দাঁড়িয়েও প্রাণের উৎসব রমজান পালনে মেতে উঠেছেন। ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই সম্মিলিতভাবে সারছেন ইফতার।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম ‘আল-আরবিয়া নিউজ’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দা পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিজেদের পাড়া আর শহরকে রঙিন কাগজের টুকরো দিয়ে সাজিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন রঙের বেলুন। ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই দীর্ঘ এক টেবিল পেতেছেন। সেই টেবিল আচ্ছাদিত করা হয়েছে লাল শালুতে (কাপড়ে)। টেবিলের দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে রোজা ভেঙে ইফতার পালনে মেতে উঠেছেন। সামান্য যা জোটাতে পেরেছেন তাই ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন।’ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া গাজার বুকে এমন সর্বজনীন ইফতারের অন্যতম আয়োজক মালাক ফাদ্দা। তার কথায়, ‘গাজায় এমন কোনও পরিবার নেই, যারা কোনও না কোনও আপনজনকে হারিয়েছেন। গত দেড় বছর ধরে যে গণহত্যা চাক্ষুস করেছি, তা বর্ণনা করার কোনও ভাষা নেই। তবুও সব শোক-দুঃখ ভুলে সর্বশক্তিমান আল্লাহুর প্রার্থনায় ব্রতী হয়েছি আমরা। বিশ্বাস করি, সব শোক জয় করতে পারব।’ ধ্বংসস্তুপের মাঝে আয়োজিত ইফতারে সামিল হওয়া মোহাম্মদ আবু আল-জিদিয়ান দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘চারিদিকে ধ্বংসস্তুপ। তার মাঝেই আমরা ইফতার করছি। এই জমি আমাদের। আমরা এই জায়গা ছেড়ে কেউ এক ইঞ্চিও লড়ব না। প্রতিকুলতার সঙ্গে বেড়ে ওঠা আমাদের। সব প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct