নিজস্ব প্রতিবেদক , নদিয়া, আপনজন: ৯০% শারীরিক প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করেও মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বসলো দুই প্রতিবন্ধী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাবা মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে তাদের দুই কন্যা সন্তান অনেকটাই ভবিষ্যৎ উজ্জলের চালিয়ে যাচ্ছে প্রচেষ্টা।শান্তিপুর ব্লকের বাগআঁচড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামল মল্লিক তিনি পেশায় টোটো চালক। স্ত্রী রেখা মল্লিক সংসারের কাজ সামলান, তার মধ্যেও তিন কন্যা সন্তানের মধ্যে দুই কন্যা সন্তান ৯০% প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকটাই ধৈর্য রেখে জীবনযাপন করতে হয় তাদের।পড়াশোনা থেকে শুরু করে তাদের কন্যা সন্তানরা কোন সমস্যায় যাতে না পরে সেই দিকেই যথেষ্ট খেয়াল রাখেন বাবা-মা দুজনেই। রুমা মল্লিক, ঝুমা মল্লিক, দুজনেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পালা। সেই মতো সকাল সকাল দুই কন্যা সন্তানকে নিজের টোটো গাড়ি করেই শান্তিপুর মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তবে সাথে ছিল স্ত্রী রেখা মল্লিক।টোটো গাড়ি থেকে নামতেই পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ে কর্তব্যরত শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হাতে হাত ধরে নিয়ে যান পরীক্ষা কেন্দ্রে, এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাবা শ্যামল মল্লিক বলেন, তার দুই কন্যা সন্তান ছোট থেকেই প্রতিবন্ধী,একজন ঠিকমতো হাঁটতে পারেনা অন্য একজন ঠিক মতো কথাও বলতে পারেনা, কিন্তু দুই কন্যা সন্তানের রয়েছে অদম্য ইচ্ছে শক্তি। রাইটারের মাধ্যমে দুজনেই পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়। দুই কন্যা সন্তানের ইচ্ছাশক্তিকে পাথেয় করে দরিদ্রতার মধ্য দিয়েও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন এখনো তিনি। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও এখনো কাটছেনা আর্থিক অনটন। পেশায় টোটো চালক হয়ে সারাদিনে যা রোজগার হয় তাই দিয়ে কোনরকম সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনই বাবা শ্যামল মল্লিক ও মা রেখা মল্লিকের চোখে মুখে রয়েছে আঘাত স্বপ্ন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুই সন্তানই উত্তীর্ণ হবে বলে আশাবাদী তারা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct