সম্প্রীতি মোল্লা, আসানসোল, আপনজন: মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে দলীয় কর্মী সভা থেকে একের পর এক ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে শিক্ষকতায় চাকরিতে আইনের বেড়াজাল থেকে কেন্দ্রীয় অগ্নিপথ ইস্যুতে সরব তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপাশি সমাজকর্মী - সাংবাদিক গ্রেপ্তারে তীব্র নিন্দা জানালেন তিনি। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় গোটা বাংলা। আসানসোলের সভা থেকে জানালেন, ১৭ হাজার শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ করতে পারছেন না তিনি। এদিন আসানসোলের কর্মিসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগ ও রাজ্যের কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়েছি, ১৭ হাজার শিক্ষকের চাকরি রয়েছে আমার কাছে। তবে আমি নিয়োগ করব কীভাবে? আদালত অনুমতি না দিলে নিয়োগ করা তো সম্ভব নয়। আমি বরাবরই বলেছি, সব ক্ষেত্রেই আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে’। টেট উত্তীর্ণ মামলাকারীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা মামলা তুলে নিন অথবা আপনাদের স্বপক্ষে রায় নিয়ে আসুন, আমি চাকরি দিতে প্রস্তুত।’ মঙ্গলবার আসানসোলের পোলো গ্রাউন্ডের কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কর্মসংস্থান থেকে অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এদিন তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘৪ বছর চাকরি দেয়নি ওরা। আর এবার সাধারণ ছেলেমেয়েরা এই প্রশিক্ষণ পাবেন না। প্রশিক্ষণ পাবেন বিজেপির কিছু শাখার লোকজন। সেনাকে সামনে রেখে চালাকি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।’ মমতার দাবি, ‘অগ্নিপথ প্রকল্পে রাজ্য পিছু কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি পাবেন। তাও মেরেকেটে মাত্র ৪ বছরের জন্য।’ এরপর সেই ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। কেন্দ্রের তরফে এমন নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন ফের একবার অগ্নিবীরদের ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরির অধিকারের দাবিতে সরব হন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, ‘৪ বছরের চাকরিতে জীবন চলে না। চাকরি করতে দিতে হবে ৬০ বছর পর্যন্ত। সেটা না পারলে মিথ্যা কথা বলবেন না। আসলে এটা একটা দুর্নীতি। বিরাট বড় দুর্নীতি।’ এর মাধ্যমে সেনায় অস্থায়ীভাবে ৪ বছরের জন্য কর্মী নিয়োগ হবে। যাদের পোশাকি নাম ‘অগ্নিবীর’। বার্ষিক বেতন ৪.৭৬ লক্ষ টাকা থেকে ৬.৯২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘যখন আপনাদের নেতারা ধর্ম নিয়ে মিথ্যে বলেন, ঘৃণা ছড়ান, তখন আপনারা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন না। সেই ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব থাকেন। আপনারা খুন করলেও চর্চা হয় না। আমরা কথা বললেই খুনি বানিয়ে দেন! জুবেইরকে কেন গ্রেপ্তার করলেন? তিস্তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হল? ওঁরা কী করেছেন?’পাশাপাশি নাম না করেও তিনি উল্লেখ করেন নূপুর শর্মার কথা। তিনি বলেন, ‘আমি নাম নেব না। আমরা নাম নিতে চাই না। কিন্তু যাঁরা ধর্ম তুলে গালাগালি করেন, তাঁদের আপনারা কেন গ্রেফতার করেন না? তবে আমাদের সরকার তাঁকে সমন পাঠিয়েছে। আমরা ছাড়ব না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct