আপনজন ডেস্ক: অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরির সময় ‘অবৈধ বিদেশি’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল চার সদস্যের এক মুসলিম পরিবারকে। বিদেশি ট্রাইব্যুনালের সেই ঘোষণার পর ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে থেকে আটক ডিটেনশন সেন্টারের থাকার পর মুক্তি পেলেন তার। তবে, বিদেশি ট্রাইব্যুনালে পুনর্বিবেচনায় তাদের পক্ষে রায় যাওয়ার পর। জানা গেছে, বিদেশি ট্রাইব্যুনাল তাদেরকে বিদেশি ঘোষণার পর তারা সেই রায়ের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার জন্য গৌহাটি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। হাইকোর্ট বিদেশি ট্রাইব্যুনালকে পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিলে তা বিবেচনা করা হয়। এরপর পুনর্বিবেচনায় বিদেশি ট্রাইব্যুনাল ওই চারজনকে ভারতীয় নাগরিক বলে রায় দিয়েছে। তার ফলে তারা ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
অসমের এই চার মুসলিম হলেন মুহাম্মদ নূর হুসেন (৩৪), তাঁর স্ত্রী সাহেরা বেগম (২৬) এবং তাদের দুই নাবালিকা। তাদের বাড়ি আসামের উদালগুড়ি জেলার লডং গ্রামে।
পেশায় রিকশা চালক হুসেনের এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা ভারতীয় বলে গর্ব বোধ করি। অসমে থাকি। আমাদেরকে বাংলাদেশি বলে ভুলভাবে অভিযোগ করা হয়েছিল। বলেছিল যে আমরা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়েছি। কীভাবে সম্ভব? আমরা তো এখানেই জন্মেছি।
হুসেনকে ও তার স্ত্রীকে গত ১৬ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। গৌহাটি হাইকোর্ট ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল করার পরে অক্টোবরে পুনরায় বিচার শুরু হয়েছিল। ওই পরিবারের পক্ষে কোনও আইনজীবী দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।
সরকারি রেকর্ডে তাদের বাপ-ঠাকুরদার নাম থাকলেও বিদেশি ট্রাইব্যুনাল তাদেরকে বিদেশি ঘোষনা করে। আসলে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও আইনজীবী নিয়োগ করতে না পারায় এক্স পার্টি হিসেবে তাদেরকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের জুন মাসে তাদেরকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে গোয়ালপাড়ায ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়। তাদের শিশুদের জন্য কোনও হোম না থাকায় তাদের ডিটেনশন সেন্টারেই রাখা হয়েছিল।
এই খবর পাওয়ার পর তার এক আত্মীয় মারফত জানতে পারেন সমাজকর্মী আইনজীবী আমান ওয়াদুদ। তিনি বিদেশি ট্রাইব্যুনালে ওই পরিবারের হয়ে বিনামূল্যে লড়েন। তারপর বিদেশি ট্রাইব্যুনালের রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয়। এরপর বিদেশি ট্রাইব্যুনালে জয় আসে।
ওয়াদুদ জানান, বহু মানুষ অর্থাভাবে আইনজীবী নিয়োগ করতে না পারায় তাদেরকে একতরফাভাবে বিদেশি চিহ্নিত করে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct