আপনজন ডেস্ক: ‘লাভ জিহাদ’ আ ‘লাভ জিহাদ’-এর নামে উত্তরপ্রদেশে ব্যাপকভাবে মুসলিমদের হয়রানির অবিযোগ উঠেছে। এর আগে লাভ জিহাদ অভিযোগে আটক করা কনের পরিচয়ে জানা যায় তিনি ভিন ধর্মী নন, মুসলিমই। তাতেও মুখ পোড়েনি যোগী সরকারের। একের পর এক লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলে মামাল করেই যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
তাই অভিযোগ উঠেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ভারতের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে তথাকথিত ‘লাভ জিহাদ’ আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন মুসলিমরা। এবার এই আইনে একই পরিবারের ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এর মধ্যে ৬ জন জেলে এবং ৫ জন এখনো পলাতক। এই পলাতকদের ধরতে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, প্রায় একমাস আগে ২১ বছর বয়সী এক যুবতী দিল্লির এক মুসলিম যুবককে ভালোবেসে বাড়ি থেকে পালান এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। এ বিষয়ে উত্তর প্রদেশের ইথা পুলিশ ওই মুসলিম যুবকের পুরো পরিবারের সদস্যদের নামে ওই যুবতীকে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ এনে ধর্মান্তরিতকরণ বিরোধী নতুন আইনে মামলা করে এবং ৬ জনকে জেলে পাঠায়। গত সপ্তাহে ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ জাভেদ এবং তিনজন মহিলাসহ পরিবারের ১০ জনকে আসামী করে জ্বলেশ্বর থানায় মামলা করা হয়েছিলো। পুলিশের দাবি আটককৃতদের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগাযোগ রয়েছে। জাভেদ এবং আরো ৪জন আত্মীয়কে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। এই ৫ জনকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ ২৫ হাজার রুপি পুরষ্কার ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার ওই যুবতীর পিতার করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়। তিনি দিল্লি থেকে জাভেদের আইনজীবীর পাঠানো চিঠি পেয়েছিলেন, যেখানে জানানো হয়েছিলো তার মেয়েকে ধর্মান্তরিত করে আদালতে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএসপি রাম নেওয়াজ সিং বলেন, এফআইআরে জাভেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ ধারায় ( অপহরণ এবং বিয়েতে বাধ্য করার অভিযোগ) মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া উত্তর প্রদেশের ধর্মীয় অধ্যাদেশ মতে, অবৈধভাবে ধর্মান্তরিত করারও অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ডিএসপি রাম। এ সময় তিনি আরো বলেন, ওই যুবতী ১৭ই নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তবে এ বিষয়ে বৃহস্পতিবারের পূর্ব পর্যন্ত পরিবার থেকে কিছুই জানানো হয়নি পুলিশকে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান কাপড়ের দোকানের মালিক জাভেদ ইথাটে ওই যুবতীর বাড়ির পাশেই থাকতেন। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই জাভেদের আত্মীয়। ধারণা করা হচ্ছে জাভেদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। তাই এদের গ্রেফতার করা হলে জাভেদের অবস্থানও জানা সম্ভব হবে এবং তাকেসহ বাকি ৫ জনকে আটক করা যাবে। কোর্টের আদেশে আটককৃতদের জেলে পাঠানো হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct