আপনজন ডেস্ক: দিল্লি হাইকোর্ট এবার আরও ২৪জন মুসলিমকে জামিন দিল। দিল্লি মাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মুক্তির জন্য আদালতে লড়াই করছিল মাওলানা আরশাদ মাদানির নেতৃত্বাধীন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। এদিন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পক্ষে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দিল্লি হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালত মুসলিমদের জামিন দিয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতের প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোট ৩০ জন মুসলিম আসামি জামিন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন অক্টোবরে জামিন পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর পূর্ব দিল্লিতে এক ভয়াবহ দাঙ্গায় কমপক্ষে ৫৩ জন মারা যান। এছাড়া বহু মানুষ আহত হয়েছিল এবং হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। নিহত ও বাস্তুচ্যুত হওয়া বেশিরভাগই মুসলমান ছিলেন।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল দাঙ্গায় মূল অপরাধীদের বিরুদ্দে ব্যবস্থা না নেওয়ায় কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। তারা অভিযোগ করে, পুলিশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের অভিযুক্ত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে বেশ কয়েকজন মুসলিমকে গ্রেফতার করে দাঙ্গার জড়িত থাকার অভিযোগে।
জানা গেছে, দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি শ্রীশ কেট রেহান পার্ধান, আরশাদ কাইয়ুম, ইরশাদ আহমেদ, মুহাম্মদ রেহান, রিয়াস্ট আলী, শাহ আলম, রশিদ সাইফি এবং জুবায়ের আহমেদকে শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করেছে। রবিবার জুবায়েরকে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে অন্যদের মুক্তির প্রক্রিয়া চলছিল।
এদিকে, কর্কর্দুমা দায়রা আদালতের বিচারক বিনোদ কুমার যাদব রিয়াস্ট আলী, শাহ আলম, রশিদ সাইফী, আরশাদ কাইয়ুম, মোহাম্মদ শাদাব, মুহাম্মদ আবিদ এবং অন্যান্য আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন।
তবে, হাইকোর্টে জামিনে মুক্ত সমস্ত আসামির জন্য ২৫,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড জমা দিতে হবে। পাবলিক প্রসিকিউটররা সমস্ত আসামির জামিন আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে আদালতকে বলেছিল যে তাদের মুক্তি দিলে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। তবে আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতে একমত হয়ে ২৪ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পক্ষে আইনজীবী জহির-উদ্দিন বাবর চৌহান ও তার সহকারী আইনজীবী দীনেশ আসামির পক্ষে হাজির হন।
জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানী আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, দাঙ্গা মামলায় মিথ্যাভাবে জড়িত সমস্ত নিরীহ মুসলমানদের ন্যায়বিচার পেতে তার সংগঠন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধরণের লোকদের সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আইনি লড়াই অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন দিল্লির দাঙ্গার সত্য ঘটনাটি উন্মোচন করেছে। তাতে দেখা গেছে, পুলিশ আসল আসামিদের বাঁচিয়েছে এবং দাঙ্গা প্রতিরোধে কিছুই করেনি। বরং নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এই নির্মম অন্যায় বিষয়ে চুপ থাকতে পারেনি, তাই ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া দিল্লি সংখ্যালঘু কমিশনও দাঙ্গায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেছিল। অভিযোগ করেছিল, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধে ব্যর্থ দিল্লি পুলিশ দাঙ্গার সময় বেশ কয়েক দিন ধরে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct