আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের তিন আইপিএসকে কেন্দ্রের ডেপুটেশনে পাঠানো নিয়ে বিতর্ক আরও জোরদার হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার যখন বোলপুরের জনসভায় ব্যস্ত তখন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর আঘাতের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকেই নিশানা করলেন।
মমতা কেন্দ্রের বিরদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজ্যের ব্যাপারে নাক গলানোর প্রতিবাদে সরব হলেন। সেই সঙ্গে দেশের যে সব মুখ্যমন্ত্রী আইপিএস বদলি নিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রবিবার অপরাহ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়া ট্যুইটারে পুলিশ আধিকারিকদের বদলি করে রাজ্যের অধিকারে নির্লজ্জভাবে নাক গলাচ্ছে কেন্দ্র বলে মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাকে সমর্থন করার জন্য দিল্লি, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও ডিএমকে নেতা এম কে স্টালিনকে ধন্যবাদ জানানা। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেষ বাঘেল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও ডিএমকে প্রধান এম কে স্টালিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, এঁরা প্রত্যেকেই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে মজবুত রাখার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বাংলার পাশে দাঁড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে ডায়মন্ডহারবারে এক জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয় আক্রান্ত হয়। তার জন্য নিরাপত্তার দেখভালে থাকা রাজ্যের তিন আইপিএসকে নিশানা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই তিন আইপিএসকে কেন্দ্র ডেপুটেশনের পাঠানোর জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে চিঠি পাঠায়। দক্ষিণবঙ্গের এডিজি রাজীব মিশ্রকে ইন্দো–তিব্বত বর্ডার পুলিশ, প্রেসিজেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ ত্রিপাঠীকে সীমা সুরক্ষা বল ও ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডেকে পুলিশ রিসার্চ ব্যুরোতে বদলি করার কথা বলা হয়। কিন্তু সাফ জানিয়ে দেয়, তারা কোনওমতেই এই তিন আপিএসকে ছাড়বে না। এ নিয়ে চরমে ওঠে কেন্দ্র রাজ্য বিবাদ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর কেন্দ্রে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন। যদিও বোলপুরে সাবাদিক সম্মেলনে মমতার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যের তিন আইপিএসকে কেন্দ্র ডেপুটেশনে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত কিনা প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত হয়, এমন কোনও কাজ আমরা করিনি। কেউ অভিযোগ তুললে প্রমাণ দিন।’
অন্যদিকে মেদিনীপুরের সভায় অমিত শাহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় প্রতিবাদে সরব হযেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটারে ফ্যাক্ট চেক প্রকাশ করে মোট ১৫টি আলাদা আলাদা পয়েন্টে অমিত শাহের বেশিরভাগই মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন ডেরেক। পিএম কিষাণ ফান্ডের ৬ হাজার টাকার হিসাব প্রসঙ্গে ডেরেক বলেন, একর প্রতি ১,২১৪ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকার একক ভাবে বার্ষিক একজন কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেয়। এভাবেই তিনি তৃণমূলের হাতে বিজেপি কর্মীয়র মৃত্যু পরিসংখ্যান ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প তথ্য ভুল হিসেবে দেখান একটি তালিকা সহ পরিসংখ্যান তুলে ধরে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct