আপনজন ডেস্ক: মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হার স্বীকার করল ভারত। টেস্টে সর্বনিন্ম স্কোরে হারল কোহলিরা। তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচে। যে কোনো দলের হিসেবে চতুর্থ সর্বনিন্ম। যদিও অ্যাডিলেডে দিন-রাতের টেস্টটিতে ভারত প্রথম ইনিংসে বড় ব্যবধানে এগিয়েই ছিল। ২৪৪ রানে গুটিয়ে গেলেও অস্ট্রেলিয়াকে ১৯১ রানে আটকে দিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছিল তারা। সেখান থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অলআউট এবং তৃতীয় দিনেই ৮ উইকেটের অপ্রত্যাশিত হার।
এদিন বিরাট কোহলিদের ছুড়ে দেওয়া ৯০ রানের লক্ষ্য ২ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেনিং জুটিতে ম্যাথু ওয়েড ও জো বার্নস মিলেই দলকে ৭০ রান এনে দেন। ওয়েড ৩৩ রান করে রানআউট হয়ে ফেরার পর ১২ রান যোগ হতেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হন মার্নাস লাবুশানে। তার বিদায়ের সময় জয়ের জন্য মাত্র ৮ রান দরকার ছিল অজিদের। যা অনায়াসেই তুলে নেন বার্নস ও স্টিভ স্মিথ। এরমধ্যে আবার দারুণ এক ফিফটি তুলে নেন বার্নস। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এই অজি ওপেনার তার ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ চার ও ১ ছক্কায়। স্মিথ অপরাজিত থাকেন ১ রান নিয়ে।
অ্যাডিলেডে দিন-রাতের টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই চালকের আসন থেকে হারের মুখে দাঁড়িয়ে যায় ভারত। দুই অজি পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউডের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে মাত্র ৩৬ রানেই গুটিয়ে যান কোহলিরা। যা আবার ভারতের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ৪২ রানের। ১৯৭৪ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে পাওয়া সেই লজ্জার রেকর্ড এখন কোহলির দলের দখলে।
অথচ প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড ছিল ভারতের। কোনোমতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রান করতে পারলেও অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলা যেত। কিন্তু গোপালি বলের সুইং সামলাতে ব্যর্থ সফরকারী দলের কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংক ছুঁতে পারলেন না।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ইনিংসগুলো পরপর সাজালে দাঁড়ায়- ৪, ৯, ২, ০, ৪, ০, ৮, ৪, ০, ৪, ১। তবে শেষ ব্যাটসম্যান মুহাম্মদ শামি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরেছেন। ফলে ভারত আসলে উইকেট হারিয়েছে ৯টি। শেষ পর্যন্ত সিরিজের প্রথম দিন-রাতের টেস্টে অজিদের সামনে ভারত লক্ষ্য দিতে পারে মাত্র ৯০ রানের। টেস্ট ইতিহাসে ভারতের এই ৩৬ রানের ইনিংস সবমিলিয়ে যৌথভাবে পঞ্চম সর্বনিম্ন। সমান ৩৬ রান আছে আরও দুই দলের। মাঝে ৩০ রানে দুবার অলআউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই হিসেবে ভারতের বর্তমান অবস্থান সপ্তম। ১৯৫৫ সালের ২৫ মার্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া সর্বনিম্ন ইনিংসের রেকর্ডের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে।
অ্যাডিলেডে কামিন্স-হ্যাজেলউডের সামনে ব্যাট হাতে রুখে দাঁড়াতে পারেননি কোহলিরা। আগের দিনের শেষে দলীয় ৯ রানের মাথায় পৃথ্বী শ (৪) বিদায় নিয়েছিলেন। বাকি ব্যাটসম্যানরা তৃতীয় দিনের শুরুতেই সেই পথ ধরলেন। শুরুটা হলো জসপ্রীত বুমরাহকে দিয়ে। দলকে ১৫ রানে রেখে কামিন্সের বলে বোলারের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন ভারতীয় নাইট-ওয়াচম্যান। ১৫ রানেই একে একে বিদায় নিলেন চেতেশ্বর পূজারা, ময়াঙ্ক আগারওয়াল এবং আজিঙ্কা রাহানে। বিরাট কোহলি(৪) একটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানাতে চাইলেও কামিন্সের বলেই তার লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। কোহলি বিদায় নেওয়ার পর বাকিরাও সেই পথে পা বাড়ান। হনুমা বিহারি (৮), ঋদ্ধিমান সাহা (৪), অশ্বিন(০)কমরানের বিনিময়ে সজঘরে ফেরেন। হ্যাজেলউড একাই তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct