আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ সরকার আদালতের নির্দেশে জেল মুক্ত ডা. কাফিল খানের বিরুদ্ধে ফের উঠেপড়ে লেগেছে। জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেফতার হওয়া চিকিৎসক ডা. কাফিল খান মুক্তি পেয়েছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে। এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল যোগী সরকার। শনিবার এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে উত্তর প্রদেশ সরকার মামলা করেছে।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর হাসপাতালে অক্সিজেনের এভাবে শিশুমৃত্যুর মিছিল থামিয়ে হিরো হয়ে উঠেছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. কাফিল খান। তবু তাকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ও শিশু মৃত্যুর খবর চাউর করে যোগী সরকারের দুর্নাম করার দায়ে গ্রেফতার হতে হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও যোগী সরকারের রোষ থেকে রেহাই পাননি কাফিল খান। গত ডিসেম্বরে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন কাফিল খান। যোগী আদিত্যনাথ সরকার তার মধ্যে দেশদ্রোহের গন্ধ পায়। তাই তাকে ২৯ জানুয়ারি মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রথমে সিএএ বিরোধী সভায় উস্কানি মূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়। এবার তাকে ফের জাতীয় সুরক্ষা আইন বা এনএসএ যে গ্রেফতার করে পাঠানো হয় মথুরা জেলে। জারি থাকে তার চাকরির উপর সাসপেনশন।
এরপর ডা. কাফিল খানের মা নুজঝাত পারভিন কাফিল খানের মুক্তির দাবিতে আর্জি জানান এলাহাবাদ হাইকোর্টে । সেই আবেদনের ভিত্তিতে মুক্তির নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর ও বিচারপতি সৌমিত্র দয়াল সিংয়ের গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ ডা. কাফিল খানের বিরুদ্ধে এনএসএ আইনে দেশদ্রোহের অভিযোগ খারিজ করে দেয়।
সেই রায়ের পর মথুরা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে কাফিল খান নিরাপত্তার অভাব রাজস্থানে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেটাই ভালো চোখে দেখছে না উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাই এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয় উত্তরপ্রদেশ।
উত্তরপ্রদেশ সরকার ডা. কাফিল খানের উপর খড়্গ হস্ত হলেও তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে দেশের চিকিৎসকদের সংগঠন। ডা. কাফিল খানের বিরুদ্ধে সাসপেনশন তুলতে এবার আর্জি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। আইএমএ-এর তরফে ডা. কাফিল খানের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুরেশ খান্নার কাছে চিঠি লিখে আর্জি জানায়, গোরক্ষপুরের বিআরডি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কাফিল খানের উপর ২০১৭ সাল থেকে চলে আসা সাসপেনশন যেন তুলে নেওয়া হয়।
কিন্তু আইএমএ-এর সেই আর্জিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার সাড়া না দেওয়ায় সম্প্রতি ডা. কাফিল খানের উপর থেকে যাবতীয় সাসপেনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানায় দেশের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়েট্রিকস’।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct