সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে ও বাবলু প্রামাণিক , বারুইপুর: বারুইপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে রবিবার বারুইপুরের নিউ ইন্ডিয়ান ফুটবল মাঠে এক বিশাল জনসভায় তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে সিপিএম এবং আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল ‘মিম’ ও ফুরফুরার পীর আব্বাস সিদ্দিকীকে নিশানা করেন। নাম না করে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারীকেও। এদিনের জনসভায় সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা যায় পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি নাম না করে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে চম্বলের ডাকাতের সঙ্গে তুলনা করেন। ফিরহাদ বলেন, একজন বিশাল দেহ নিয়ে চম্বলের ডাকাত বাংলায় আসছেন। চম্বলের ডাকাত কি বাংলায় ঠিক করে দেবেন কাকে ভোট দেবেন? এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, বাংলার মানুষ কি নপুংসক যে ওই চম্বলের দস্যুর বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে না?
এরই সঙ্গে বিজেপি যে গুজরাতে দু হাজার সংখ্যালঘুকে বিজেপি হত্যা করেছে সেই সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কথা তুলে ধরেন ফিরহাদ। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সাম্প্রদায়িক নীতি, লাগাম ছাড়া দুর্নীতি, কৃষক মারা কৃষি বিলের প্রতিবাদে ও দেশ ভাগের চক্রান্তের বিরুদ্ধেও তিনি মুখ খোলেন। সিপিএমের আমলে কোনও উন্নয়ন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন।
আমরা উন্নয়নের সাথে আছি। আমরা বলতে পারি না জয় শ্রীরাম বা আল্লাহু আকবরের নামে ভোট দাও বলতে পারি না। বলতে পারি উন্নয়নের নামে ভোট দাও। একদিকে যেমন বিজেপি আসছে, আর এক দিকে আবার ভোট ভাঙানোর জন্য একেকটা হায়দরাবাদের পার্টি, কখনো একটা ভাইজান, তাকে নিয়ে এসে ভোট ভাঙানো এবং মেরুকরণের চেষ্টা হচ্ছে। যারা অগ্রগতির কথা বলবে, যারা উন্নয়নের কথা বলবে, যারা মানুষকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলবে তাদের কাছে কোনও ভোট থাকবে না। হয়, ভাইজানের কাছে চলে যাবে, না হয় দাদার কাছে চলে যাবে। মানুষের ভোট মানুষের থাকবে না। বাংলার মানুষ কি এত বোকা সেই প্রশ্ন তোলেন।
মমতার উন্নয়নের নানা খতিয়ান তুলে ধরেন ফিরহাদ। এ প্রসঙ্গে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারুইপুর ফ্লাইওভার করে দিয়েছেন, কামালগাজি ফ্লাইওভার করেছেন, রাস্তা গুলো নতুন করে বাঁধিয়ে দিয়েছেন, এলাকায় বাতি ও জলের ব্যবস্থা করেছেন। অথচ, নতুন কিছু এলে মানুষের মন উসখুস করে। এক্ষেত্রে, ফিরহাদ তার ভাষণে বিজেপির সঙ্গে সমানতালে নাম না করে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল ‘মিম’ ও ‘ভাইজান’ হিসেবে পরিচিত ফুরফুরার তরুণ পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী (ভাইজান)-কে আক্রমণ করেন।
মানুষ ভাবে হয়তো ‘ভাইজান’ অথবা হায়দরাবাদের দল এলে নতুন করে কিছু হবে। যারা হায়দরাবাদ থেকে আসবে তাদের পক্ষে কিংবা ‘ভাইজান’-এর পক্ষে যাবে তাহার আসলে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারবে।
নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, সাড়ে চার বছর মন্ত্রী থাকার পর কেউ বলছেন আমি সম্মান পাচ্ছি না! এখন বিজেপির কলকাঠিতে এইসব করে বেড়াচ্ছো! এতদিন কোথায় ছিলে? আর অনেকে আবার তার সঙ্গে সুর মেলাচ্ছে! একটা শেয়াল হুক্কা হুয়া করলে সব শেয়াল হুক্কা হুয়া করে।
এদিনের জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, যাদবপুরের সংসদ মিমি চক্রবর্তী, গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সাংসদ সুভাশীষ চক্রবর্তী, জেলা যুব সভাপতি বিধায়ক সওকাত মোল্লা, জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মন্ডল, বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল চন্দ্র মন্ডল প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct