আপনজন ডেস্ক: বিতর্ক উস্কে দিয়েই সম্পন্ন হলো রতুয়া-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু সেলের কর্মী সম্মেলন। রতুয়া-১ ব্লকের কাহালা পঞ্চায়েতের কাহালা হাইস্কুল মাঠে বড় ধরনের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু সেল। দূর-দূরান্ত থেকে আগত কর্মীদের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা ছিল। তবে এই কর্মী সম্মেলনে ডাক পাননি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ফজলুল হক এবং রতুয়ার শাসকদলের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সেলের জেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন জানান, ব্লক সম্মেলনে কারা অতিথি থাকবেন সেটা ঠিক করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্লক সভাপতিকে। তবে, মাদারের ব্লক সভাপতি কিংবা এমএলএ কেন এদিনের সম্মেলনে আসেননি এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এদিনই জেলা তৃনমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে জেলা কমিটির মিটিং ডেকেছিলেন সভানেত্রী মৌসম নুর। সেই বৈঠকে যাওয়ার জন্যই হয়তো সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সম্মেলন এড়িয়ে গিয়েছেন এই দুই নেতা।
বুধবার দুপুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের সূচনা করেন সেলের সভাপতি মোশারফ হোসেন, চেয়ারম্যান হাফেজ নজরুল ইসলাম ও জেলা তৃণমূলের সম্পাদক জনপ্রিয় নেতা শেখ ইয়াসিন সহ অনেকেই। আগত অতিথিদের বরণ করে নেওয়ার পরেই শুরু হয় সম্মেলন। সম্মেলনে কার্যত একুশের নির্বাচন নিয়ে আলোকপাত করেন বিভিন্ন বক্তা। আগত অতিথিদের জন্য স্বাগত জানিয়ে ভাষণ দেন ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ডঃ হারুন অল রশিদ। রতুয়ার জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিন বলেন, একুশের নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু সহ সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে একজোট হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি গর্বের সঙ্গে দাবি করেন, বিগত লোকসভা নির্বাচনে উত্তর মালদা আসনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হলেও রতুয়া বিধানসভা এলাকায় তাকে ব্যাপক হারে লিড দেওয়া হয়েছিল। তার বিশ্বাস আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে বড় ব্যবধানে জয়যুক্ত করে বিধানসভায় পাঠাবেন রতুয়ার মানুষ। সেলের চেয়ারম্যান হাফেজ নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে পর্যন্ত পরাধীন ভারতকে স্বাধীন করার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করেছিলেন ভারতীয়রা। একুশের নির্বাচন সেই স্বাধীনতার লড়াই এর মত। বাংলার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে আসছে একটি সাম্রাজ্যবাদী, ফ্যাসিবাদী ও সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকে এখানে নেতা আমদানি করছে বিজেপি। এতে লাভ হবে না। বাংলার মানুষ তৃতীয়বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিম সম্পর্কে তার বক্তব্য, আসাদউদ্দিন সাহেব যদি বাংলায় আসেন তাকে আমরা অতিথি হিসেবে বরণ করব। কিন্তু তিনি যাতে কোথাও প্রার্থী না দেন সেই অনুরোধ রাখব। সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, সেলের শক্তি দিনদিন বৃদ্ধি হচ্ছে মালদায়। তাই বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠনকে মজবুত করার পাশাপাশি সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে একজোট করে রাখার জন্য ব্লকে ব্লকে সম্মেলনের ডাক দিয়েছে সেল। তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, রতুয়াতে কোন ডিগ্রী কলেজ নেই। অগ্নিনির্বাপণ কেন্দ্র নেই। অনেক কিছুই খামতি রয়েছে। তাই রতুয়ার মানুষ যাকে সর্বক্ষণের জন্য পাশে পাবেন সেরকম ব্যক্তিকে রতুয়ায় বিধায়ক হিসেবে দেখতে চাইছেন বাসিন্দারা। উন্নয়নের জন্য একটি জনপ্রিয় মুখ দরকার বলেও তিনি দাবি করেন। যদিও দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন এ কথা জানিয়ে মোশারফ সাহেব বলেন, রতুয়ার মাটিতে যিনি প্রার্থী হন না কেন জোড়া ফুলের প্রতীকে তাকে বিশাল ব্যবধানে জেতানোর জন্য কার্যকরী ভূমিকা নেবে সংখ্যালঘু সেল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct