হাসনাবাদ: অগ্রহায়ণের হিমের পরশ পড়তেই বসিরহাট লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় খেঁজুর গাছের রস থেকে নলেন গুড় তৈরির ইতিহাস বাংলার এক ঐতিহ্য। খাদ্য রসিক বাঙালিকে খেঁজুর রসের তৈরি নলেন গুড় রসনায় তৃপ্তি জোগায়। পৌষ পার্বণে পিঠেপুলি এবং দোকানে রকমারি নলেন গুড়ের মিষ্টির পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।
সীমান্তবর্তী উত্তর ২৪ পরগনার টাকি-হাসনাবাদ, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জসহ একাধিক জায়গায় খেঁজুর গাছ কাটা হয় রস সংগ্রহের জন্য। সেই খেঁজুর গাছের রস শিউলিরা বাড়িতে জ্বাল দিয়ে সুস্বাদু নলেন গুড় তৈরি করেন। প্রস্তুতকৃত নলেনগুড় কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যায়। হাসনাবাদের বাসিন্দা শিউলি পরেশ সাঁপুই বলেন, আগে প্রচুর খেঁজুর গাছ ছিল। জনবসতি বৃদ্ধি ও রাস্তা চওড়া হওয়ার স্বার্থে প্রচুর গাছ কেটে ফাঁকা করে দিয়েছে। এছাড়া অনেকে জলা ও চাষের জমিতে আবাসন ও ভাঁটার ইট কাটার জন্য প্রচুর সংখ্যক খেঁজুর গাছ কেটে ফেলেছে। তাই আগের তুলনায় সেই রকম খেঁজুরের রস সংগ্রহ করা যায় না। খেঁজুরের পাটালির দামটাও তাই বেশি পড়ে যায়। কম পরিমাণে খেঁজুরের রস পাওয়ায় চাহিদার তুলনায় আমরা যোগান দিতে পারি না। আগে কলকাতা থেকে প্রচুর অর্ডার আসত হাসনাবাদ-টাকিতে। লোকমুখে শোনা যায় শহরতলীতে খেঁজুর গুড়ের একটা অন্যরকম চাহিদা ছিল। কিন্তু অর্ডার আসলেও আমরা তো আর চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই দিতে পারি না খেঁজুরের রসের অভাবে।
নলেন গুড় কিনতে আসা ক্রেতা গড়িয়ার বাসিন্দা সুমন চক্রবর্তী বলেন, ট্রেন চলছে তাই টাকিতে আত্মীয়র বাড়ি এসেছিলাম। এখানে খুব ভালো নলেন গুড় পাওয়া, ভাবলাম বাড়ি ফেরার আগে খানিক কিনে নিয়ে যাই। কিন্তু সেই সুগন্ধ নলেন গুড় মিলল কই?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct