আপনজন ডেস্ক: ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অর্ডিন্যান্স জারির কথা বলেছিলেন। সেই মতো কাজও হল। লাভ জিহাদ রুখতে যোগী সরকারের প্রস্তাবিত অর্ডিন্যান্সে শনিবার সিলমোহর দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল। ফলে, এদিন থেকে এটি উত্তরপ্রদেশে আইন হিসেবে পরিণত হল। তবে, এই আইন মূলত লাভ জিহাদ রোখার জন্য হলেও এসসি এসটিদের ধর্মান্তর রুখতেও নানা শাস্তির কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আদিবাসীরা বৌদ্ধ অথবা ক্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে গেলে শাস্তি পেতে হবে। লাভ জিহাদ রুখতে যোগী সরকারের অর্ডিন্যান্সে মূলত ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা রয়েছে। এ্ই আইনে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সেই সঙ্গে অ-জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করার বিধান রযেছে। ইউপি ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক, হরিয়ানা এবং হিমাচল প্রদেশে এই বিষয়ে আইন তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের আইন কমিশনের প্রধান আদিত্যনাথ মিত্তাল বলেন, যে ভারতীয় সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দিয়েছে, তবে কেউ কেউ এর অপব্যবহার করছে। বিবাহ, চাকরি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ধর্ম পরিবর্তন করে ভাল জীবনযাপনের জন্য প্রলুব্ধ হচ্ছে। তাই শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার লাভ জিহাদ রুখতে যে আইন করেছে তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল: বিয়ের মাধ্যমে বিভ্রান্তি, মিথ্যা, লোভ দেখিযে বা জোর করে ধর্মান্তরের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বনিম্ন এক বছর এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে অভিযুক্তকে। কোনও এসসি এসটি মহিলা বিয়ের জন্য বা জোর করার ফলে ধর্মান্তর করেন তাহলে আইন লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচিত হবে। এটি সর্বনিম্ন তিন বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজা বহন করতে পারে। এমন ক্ষেত্রে জরিমানা হবে ২৫ হাজার টাকা।
গণ ধর্মান্তরের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন তিন বছর এবং সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। জরিমানার পরিমাণ ৫০ হাজার পর্যন্ত হবে।
কেউ যদি ধর্ম পরিবর্তন করতে চান তবে তাকে দু’মাস আগে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করতে হবে। এটি করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে ৬ মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। জরিমানার পরিমাণ হবে ১০ হাজার টাকা।
অর্ডিন্যান্সে আরও বলা হয়েছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে বাবা-মা, ভাইবোন বা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। ধর্ম পরিবর্তনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে এক বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত দণ্ডনীয় হতে পারে। লাভ জিহাদের মতো মামলায় যারা সহায়তা করছেন তাদেরও প্রধান আসামি করা হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। অধ্যাদেশ অনুসারে, যে পণ্ডিত বা মাওলানা বিবাহ করেন তাদের সেই ধর্ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct