আপনজন ডেস্ক : প্রাচীন ভারতে হিন্দুরা কি তাদের উৎসবের সময় আদৌ আতশবাজির ব্যবহার করতেন? এমন প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েছেন ব্যাঙ্গালোরের একজন মহিলা আইপিএস অফিসার ডি রূপা মৌদগিল। তাঁর এই প্রশ্ন তোলায় বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত সিনিয়র আইপিএস অফিসারকে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন তামিলনাডুর রাজনৈতিক দল ডিএমকের নেত্রী কানিমোঝি কিংবা কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি'র। এই বিতর্কের সূচনা আসলে এ বছরের দীপাবলীর দিনে ডি রূপার একটি টুইটার পোস্টকে ঘিরেই। দীপাবলীকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজ্যে আতশবাজির বেচাকেনা ও জ্বালানোর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল, সেই পটভূমিতেই ওই পোস্টটি করেছিলেন ব্যাঙ্গালোরের ওই জনপ্রিয় পুলিশ কর্মকর্তা। টুইটারে তিনি নিজেরই একটি ফেসবুক লিঙ্ক পোস্ট করেন, যাতে লেখা ছিল, 'আমাদের উৎসব কি এতই অন্তঃসারশূন্য যে আতশবাজি না-ফাটালে উৎসব হবে না? দীপ জ্বালিয়ে, মানুষের সঙ্গে দেখা করে বা মিষ্টি বিলি করে কত ভাবেই না উৎসব পালন করা যায়। অথচ কিছু লোক বাজি ফাটানোর জন্য জেদ ধরে থাকবে।আতশবাজি ফাটানো যাচ্ছে না বলে যারা হিন্দুদের সর্বনাশ হয়ে গেল রব তুলেছেন, তাদের উদ্দেশে বলব বৈদিক যুগের আগে-পরেও কিন্তু বাজি ফাটানোর কোন রীতি ছিল না। আমাদের পুরাণ-মহাকাব্য আতশবাজির কোন উল্লেখ নেই। এই দেশে আতশবাজি এসেছে ইউরোপীয়দের হাত ধরে। কাজেই এটা কখনোই হিন্দু ধর্মের 'কোর ট্র্যাডিশন' বা মৌলিক পরম্পরা, রীতি নীতির অংশ নয়।' তার এই পোস্টের সঙ্গে সঙ্গেই টুইটারের একটা বড় অংশ ডি রূপাকে আক্রমণ করতে শুরু করে। একজন ইউজার দাবি করেন, প্রাচীন ভারতে আতশবাজির ব্যবহার ছিল না, এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল। ওই পুলিশ কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মন্তব্য করে, 'প্রাচীন শাস্ত্র ও পুরাণ থেকে শ্লোক উদ্ধৃত করে আমরা দেখিয়ে দিতে পারি প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে বাজি ফাটানোর চল ছিল।' ক্রমশ 'ট্রু ইন্ডোলজি' এবং ডি রূপার মধ্যে তর্কাতর্কি ভীষণ তিক্ত ও খারাপ মোড় নিতে থাকে, একটা পর্যায়ে টুইটার ট্রু ইন্ডোলজি-র অ্যাকাউন্টটিই বন্ধ করে দেয়। যদিও এ জন্য তারা কোনও নির্দিষ্ট কারণ দেখায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct