আপনজন ডেস্ক: ন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন প্রথম জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ শুরু করেছিল। পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস সেই আন্দোলনকে নিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। নন্দীগ্রামের সেদিনের আন্দোলন যদি আমরা না শুরু করতাম তাহলে এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসত না। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার নারকেলবেড়িয়া গ্রামে শহীদ তিতুমীরের শাহাদত দিবস পালন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। নন্দীগ্রামে প্রথম জমিয়ত আন্দোলন শুরু করলেও পরে সেই আন্দোলনের রাশ তৃণমূল নেয়, তা রাজ্যের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিও স্বীকার করেন বলে সিদ্দিকুল্লাহ দাবি করেন।
এদিন নারকেলবেড়িয়া গ্রামে শহীদ তিতুমীরের শাহাদাত দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। জমিয়তের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আমি রাজ্যের এক মন্ত্রীও বটে, কিন্তু সত্য কথাটাকে সত্য করেই বলতে জানি। তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও তিতুমীরকে নিয়ে আজ কেউ ভাবেননি। তিতুমীরের নামে নেই কোন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সংগ্রহশালা। পাশাপাশি তিতুমীরের নামে একটি সংগ্রহশালা ও কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানান মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ।
স্মরণসভা থেকে বিভিন্ন বক্তা তিতুমীরের জীবনকাহিনীর একাধিক পর্যালোচনা তুলে ধরেন। বেলুড়মঠের স্বমী পরমানন্দ মহারাজ তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার স্মৃতি নির্মাণের পাশাপাশি কলকাতার রাস্তা তিতুমীরের নামে করার দাবি জানান। তবে তিতুমীরের স্মরণসভা থেকে ক্ষোভ উগরে দেন তিতুমীরের নবম প্রজন্ম সৈয়দ গোফরান। তার কথায়, ‘তিতুমীর ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন পারাধীন ভারতের সমস্ত জাতীর জন্য কিন্তু বইয়ের পাতাতে শুধুমাত্র কয়েক জায়গায় তার নাম।’ এর পশাপাশি তিতুমীরের গ্রামের রাস্তাঘাটের অচলাবস্থা, বংশধরদের খোঁজ না নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এভাবে অবহেলায় তিতুমীর শুধুমাত্র ইতিহাসের পাতা থেকে নয় সমগ্র মানুষের থেকে তিতুমীর দূর হয়ে যাচ্ছে। রাজ্য গ্রন্থগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি অবশ্য এনিয়ে জেলাশাসক ও স্থানীয় প্রশসানকে দায়ী করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান, অধ্যাপক কুমারেশ চক্রবর্তী, বিশ্বকোষ পরিষদের পার্থ সেনগুপ্ত, অসিত চক্রবর্তী ও বেলুড় মঠের স্বামীজি সহ বিশিষ্টরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct