আপনজন ডেস্ক: আজাবাইজান সেনা কারাবাখের দ্বিতীয় শহরে দখল নেওয়ার পর আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বিরোতির চুক্তি হয়েছে। আর এই চুক্তির তদারকি করছে তুরস্ক ও রাশিয়া। কিন্তু এই বিরোতি মানতে নারাজ আর্মেনীয় জনগণ। তাই আর্মেনীয়দের ফুঁসতে দেখে চুক্তি ভঙ্গ করা নিয়ে দেশটির সরকারকে আগেভাগেই সতর্ক করল তুরস্ক।
সম্প্রতি তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, আর্মেনিয়া যদি কোনোভাবে চুক্তিভঙ্গ করে, তা হলে তার ফল ভুগতে হবে। তুরস্কের সেনা আর্মেনিয়াকে কঠিন জবাব দেবে। নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে গত ছয় সপ্তাহ ধরে তুমুল যুদ্ধের পর গত সোমবার রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আজারবাইজান, আর্মেনিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। যেখানে আপাতত যুদ্ধ বন্ধের একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে। চুক্তিতে কার্যত জয় হয়েছে আজারবাইজানের। কারণ, নাগর্নো-কারাবাখের অধিকাংশ এলাকা এখন আজারি সেনার হাতে। চুক্তিতে স্থির হয়েছে, নাগর্নো-কারাবাখে যে যেখানে অবস্থান করছে, সেই এলাকা তার বলে বিবেচিত হবে। এই এলাকা আজারবাইজানের থাকায় এখন ওই দেশটির বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
অন্য দিকে আর্মেনিয়াতে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে দেশের জনতা। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছেন। এই পরিস্থিতিতে আর্মেনিয়া চুক্তি ভেঙে ফের যুদ্ধে নামতে পারে বলে মনে করছে অনেকেই। সেই আশঙ্কা থেকেই বৃহস্পতিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্মেনিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে।
এদিকে কারাবাখ সংঘাত স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে ফ্রান্স প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানু্য়েল ম্যাক্রোঁ। তবে এমন এক সময় ফ্রান্স এই প্রস্তাব রাখল, যখন এক সময়ের সোভিয়েত অঞ্চলে নিজের সামরিক পদচিহ্ন প্রসারিত করল রাশিয়া। কৌশলগতভাবে অঞ্চলটিতে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
নাগোরনো-কারাবাখ বিতর্ক নিরসনে গঠিত আন্তর্জাতিক গ্রুপের সহপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছে মস্কো। এ ছাড়া এই অঞ্চলে নজর রয়েছে ওয়াশিংটন ও প্যারিসেরও। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে সই করা চুক্তির অংশ নয় ওই দুই পরাশক্তি।
ফরাসি জনসংখ্যার মধ্যে চার থেকে ছয় লক্ষ মানুষ আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত। সংঘাতে কোনো এক পক্ষকে সমর্থন না দেয়ার ক্ষেত্রে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে বেশ সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু দেশে বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। ইরেভানকে সহায়তায় তিনি যথেষ্ট চেষ্টা করেননি বলে তাদের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানায়, আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাশিনায়েনকে তিনি আশ্বস্ত করতে চাচ্ছেন। লড়াই বন্ধে প্রেসিডেন্ট সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর্মেনিয়া ও তার জনগণের প্রতি বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে একটি ন্যায়সঙ্গত, স্থানীয় গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধানে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন।