আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের সংখ্যালঘুদের জন্য এক বড় সুখবর বয়ে আনল রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর। রাজ্যের আনএডেড মাদ্রাসাগুলির উন্নয়নে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর প্রায় ৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করল্। মঙ্গলবার রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের স্পেশাল সচিব এক সার্কুলারে (G01920002484MD, dated: 10-11-2020) রাজ্যের ১৫৩টি আনএডেড মাদ্রাসার পরিকাঠামো উন্নয়েন খাতে ব্যয়ের জন্য অনুমোদনের কথা জানিয়েছেন।
ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৫৩টি আনএডেড মাদ্রাসাকে ক্লাস রুম, টয়লেট নির্মাণ ও পানীয় জলের (টিউওয়েল)-এর জন্য ব্যয় করা হবে। এই সব দাবির সপক্ষে রাজ্যের আনএডেড মাদ্রাসাগুলির শিক্ষক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। সেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আন এডেড মাদ্রাসাগুলির জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করবেন। ফিরহাদ হাকিমের সেই চেষ্টা সফল হওয়ায় এই আর্থিক সাহায্যের জন্য আনএডেড মাদ্রাসার শিক্ষককরা পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছেন ফিরহাদ হাকিমকে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৫৩টি আনএডেড মাদ্রাসা রয়েছে। এগুলি চলে আসছে সেই বাম আমল থেকেই। সরকারি সাহায্য ব্যতিরেকে রাজ্য সরকারের তরফে আনএডেড মাদ্রাসাগুলিকে শুধু পঠনপাঠনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু সংবিধানের ৩০ ধারা অনুযায়ী তারা দাবি করতে থাকে মাদ্রাসা উন্নয়ন ও শিক্ষকদের বেতনও দিতে হবে। বাম আমলের অবসানের পর তৃণমূল সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় তারা আনএডেড মাদ্রাসাগুলির উন্নয়নে সাহায্য করবে। সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা ব্যানাজী ১০,০০০ আন এডেড মাদ্রাসাকে সরকারি অনুমোদনের কথা বলেছিলেন। এরপর ২০১৩ সালের ৮ ফ্রেব্রুয়ারি মাইনোরিটি ও মাদ্রাসা দফতরের তৎকালীন জয়েন্ট সেক্রেটারি পি বি সালিম একসার্কুলার জারি করে বলা হয়েছিল অনুমোদিত আন এডেড মাদ্রাসাগুলিকে সরকারি সমস্ত সাহায্য ও সহযোগিতা করবে দফতর।সেই সরকারি সার্কুলার বাস্তবায়িত না হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় আন্দোলন চালায় পশ্চিমবঙ্গ আন্ এডেড মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটি। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর শরণাপন্ন হলে তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রাজ্য সম্পাদক আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন, আন এডেড মাদ্রাসা উন্নয়নের দাবি নিয়ে বৈঠকের পর তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই দাবি পূরণ হওয়া পথে। আন এডেড মাদ্রাসায় জন প্রায় ৩১ কোটি ব্যয়ের অনুমোদন ফিরহাদ হাকিমের বিমেষ উদ্যোগ ছাড়া হত। তিনি যেভাবে খুবই আন্তরিকভাবে বিয়ষটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করে উন্নয়নের জন্য এই বিপুল টাকার অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছেন তা রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজ চিরদিন মনে রাখবে। এই আর্থিক সাহায্য ফিরহাদ হাকিম ছাড়া কোনওভাবেই পাওয়া যেত না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব যে সার্কুলার জারি করেছেন তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৫৩টি আন এডেড মাদ্রাসার জন্য মোট ৩০ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪, ৯৩২ টাকা ব্যয় করার অনুমোদন দেওয়া হল। এই অর্থ শ্রেণিকক্ষ, শৌচাগার ও পানীয় জলের জন্য টিউবওয়েল নির্মাণ ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে।
এই সার্কুলার রাজ্যের ১৭টি জেলার জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কোন মাদ্রাসার জন্য কত বরাদ্দ তা উল্লেখ করা হয়েছে ওই সার্কুলারে। ওই তালিকা অনুযায়ী উত্তর দিনাজপুর জেলায় সবচেযে বেশি আনএডেড মাদ্রাসা এই সাহায্য পাচ্ছে। ওই জেলার ৩৪টি আনএডেড মাদ্রাসা সাহায্যের তালিকায় আছে।
রাজ্য সরকারের সার্কুলার ও সাহায্যপ্রাপ্ত আনএডেড মাদ্রাসার তালিকা:
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct