আপনজন ডেস্ক : মানব জীবনে বিবাহ একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সব পুরুষরাই চায় ভালো নারী আর সব নারী চায় ভালো পুরুষ। আদর্শগত পার্থক্যও কাজ করে বিবাহের ক্ষেত্রে। ইসলামী বিধানমতে মুসলিমদের জন্য পৌত্তলিককে বিবাহ করা চরমভাবে নিষিদ্ধ। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা (মুসলিম পুরুষরা) পৌত্তলিক নারীকে বিবাহ করবে না, যে পর্যন্ত না সে ঈমান আনে- অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আল কুরআন, ২: ২২১।
‘তোমরা (মহিলা মুসলিমারা) পৌত্তলিক পুরুষদের বিবাহ করবে না যে পর্যন্ত না ওরা ঈমান আনে- অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।’ আল কুরআন, ২: ২২১।
‘যদিও পৌত্তলিক পুরুষ কিংবা পৌত্তলিক নারী (সৌন্দর্যে, রূপে) তোমাদেরকে আকর্ষণ করে।’ আল কুরআন, ২: ২২১।
ওই ছত্রে বা আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যে পর্যন্ত না ঈমান আনে’ (হাত্তা ইউমেন্না)। অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এমন প্রশ্ন হল, কেউ যদি বিবাহ করার জন্য মুসলমান হয় তবে তার ইসলাম গ্রহণ কতটা শরীয়ত সম্মত? ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিবাহের উদ্দেশ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা মূল্যহীন। একথার সপক্ষে প্রামাণ্য হাদীস গ্রন্থ বোখারির বর্ণনা নিম্নরূপ- আল্লাহর রাসূল মাহাম্মদ সা. বলেছেন, প্রতিটি কাজ তার অন্তরের ইচ্ছার উপর (নিয়তের উপর) নির্ভর করে- যে ব্যক্তি দুনিয়ার সুবিধার্থে হিজরত করবে সে তাই পাবে, কেউ যদি কোনো নারীকে বিবাহ করার জন্য হিজরত করে তবে তার হিজরত সেজন্য হবে যেজন্য সে হিজরত করেছে।
এখানে হিজরত করার অর্থ হচ্ছে ইসলাম ধর্মগ্রহণের উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে ঘরবাড়ি সব কিছু ছেড়ে মদিনা যাওয়া। অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি যদি কোন নারীকে বিবাহ করার জন্য হিজরত করে অথবা কোনও নারী পুরুষকে বিবাহ করার জন্য হিজরত করে, তবে তার হিজরত ইসলামের জন্য নয়। বরং নারী বা পুরুষকে বিবাহ করার জন্য। ইসলামের খাতিরে হিজরত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুণ্যের কাজ। ফলে কেউ যদি ইসলাম গ্রহণ করতে চায় তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামকে ভালোবেসে ইসলাম গ্রহণ করলে শুদ্ধভাবে ইসলাম গ্রহণ করা হবে। অশুদ্ধি ঘি রং দেখে চেনা যায় না, স্বাদে বোঝা যায়। কোনও মুসলিম নামীয় রাজা-বাদশার কোনও পৌত্তলিক নারীকে বিবাহ করা শরীয়তি বিধান নয়। সীমালঙ্ঘনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলেও প্রেম বড় বালাই। স্কুলে কলেজে পথে-ঘাটে অফিস-আদালতে জাতপাত ধর্ম কর্ম কোনও বাধাই খাটে না। কেবলমাত্র পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ভিন্ন ধর্মের নারী-পুরুষ উভয়েই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এমন নজিরও আছে। আর তারকারাজির ইসলামে নাম লেখোনোর হাট কারওা অজানা নেই। ফলে বলা যায় ব্যক্তিবিশেষের বিবাহে সীমালঙ্ঘনের জন্য ইসলাম ধর্মকে দায়ী করা মূর্খতার পরিচয় বই কিছুই নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct