রাজারহাট, ৫ নভেম্বর: বাংলার ধর্মনিরপেক্ষ মাটিকে নষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি সরকার। তুষ্টিকরণ এর রাজনীতি করে বিভাজনের রাজনীতি করছেন দিদি ও মোদি ভাই। দিল্লিতে যেমন স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছেন বিজেপি সরকার তেমনি রাজ্য বিরোধী-শূন্য করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এভাবেই বৃহস্পতিবার নিউটনের এক আলোচনা সভা থেকে নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোড়া ফলায় বৃদ্ধ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের একটি পাঁচতারা তারা হোটেলে বাংলার বিভিন্ন মুসলিম ও দলিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত হন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এদিনের আলোচনা সভা থেকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আগামী দিনে দেশ তথা রাজ্যের সুরক্ষা, নিরাপত্তা নিয়ে ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সেই আশঙ্কা থেকে সকলকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন ধর্মীয় অধিকার সংবিধান দিয়েছে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া সমাজকে মূলস্রোতে টেনে আনতে হবে। এর জন্য আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেস তথা গণতন্ত্রপ্রেমী, সেক্যুলারপন্থী সমস্ত মানুষ জনকে নিয়ে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন এর মত প্রকাশ করেন অধীর চৌধুরী। এদিন তিনি তৃণমূল সরকারকে এক হাত নিয়ে বলেন এ বাংলায় বিজেপির উত্থান হয়েছে শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সৌজন্যে। বাংলার মানুষ বিজেপির কথা জানত না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় বিজেপিকে স্বাগত জানিয়েছেন। জাতপাতের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে এ বাংলায়। আগামী দিনে এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ভেঙে দেওয়ার জন্য সর্বস্তরের মানুষকে আহ্বান করেন তিনি। তার পরামর্শ বাংলার সর্বস্তরের মানুষ একজোট হয়ে আগামী বিধানসভায় লড়াই করুন। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন কংগ্রেস আমলে মুসলিমদের চাকরি সমস্ত স্থানে সংখ্যা অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মুসলিম দরদী হয়ে থাকে তাহলে আজ চাকরিতে দুই শতাংশের নিচে অবস্থান কেন প্রশ্ন রাখেন অধীর চৌধুরী।
এদিনের সভার মূল আয়োজক সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর রাজ্য সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তৃণমূল সরকারের উপর বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ আস্তা রেখেছিল। আজ তৃণমূল সরকারের উপর থেকে বাংলার মানুষের বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনের চাওয়া পাওয়া অধিকার যেন ফুরিয়ে এসেছে। সাচার কমিটির রিপোর্ট দেখলেই বাংলার সংখ্যালঘু মুসলিমদের দুর্দশার কথা পরিস্কার হয়ে ওঠে। তাই তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সংখ্যালঘু উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে কটাক্ষ করেন অধীর চৌধুরী। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী মমতার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী হওয়ার পর তাকে বই গোনার কাজ দেওয়া হয়েছে! এদিনের সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আমানত ফাউন্ডেশনের কর্ণধর শাহ আলম, জমিয়তে আহলে হাদীসদের রাজ্য সম্পাদক আলমগীর সরদার, জামায়াতে ইসলামী হিন্দের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি মোহাম্মদ নুরুদ্দিন সহ বিশিষ্টরা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু ছাত্র কাউন্সিলের রাজ্য সম্পাদক নাজমুল আরেফীন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct