আপনজন ডেস্ক: রাজ্যে লোকাল ট্রেন চলা নিয়ে বেশ কয়েকবার রেল কর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বৈঠকের পর অবশেষে জট খুলতে চলেছে। একই সপ্তাহে এই নিয়ে তিনবার বৈঠকের পর রাজ্যবাসীদের জন্য সুখবর এল নবান্নে সূত্র থেকে। ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণে লকডাউন ঘোষণার পরদিন থেকে দেশজুড়ে লকডাউন করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। দীর্ঘ সাতমাস পর আগামী বুধবার ১১ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে সীমিত সংখ্যক লোকাল ট্রেন রাজ্যে চালু হবে। রাজ্যে এই লোকাল ট্রেন চালুর কথা কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ট্যুইটারে জানিয়ে দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘১১ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গের শহরতলিতে ট্রেন সার্ভিস চালু হচ্ছে। আর তা হচ্ছে সব ধরনের সুরক্ষ বিধি মেনে যাতে অনায়াসে যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারে।’
এদিনে নবান্ন সূত্র জানিয়েছে, রেল কর্তাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের বৈঠকে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত ১৮১ জোড়া অর্থাৎ ৩৬২টি ট্রেন চলবে। রাজ্য জুড়ে। আর তার চলবে পুরনো সময়সূচি অনুযায়ী।
জানা গেছে, হাওড়া ডিভিশনের তুলনায় শিয়ালদা ডিভিশনে লোকাল ট্রেনে বেশি ভিড়ের কারণে বেশি ট্রেন চলবে শিয়ালদা থেকে। শিয়ালদা ডিভিশনে আপাতত ১১৪ জোড়া অর্থাৎ ২২৮টি ট্রেন, হাওড়া ডিভিশনে ৫০ জোড়া অর্থাৎ ১০০টি লোকাল ট্রেন চলবে। বাকি ১৭ জোড়া অর্থাৎ ৩৪টি ট্রেন চলবে দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশন অর্থাৎ খড়গপুর থেকে। তবে সব ক্ষেত্রেই করোনা বিধি মানা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
স্টেশনে ভিড় সামাল দিতে রেল পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের সমন্বয় ঘটিয়ে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি স্টেশনের এন্ট্রি গেটে থাকবে নিরাপত্তারক্ষী। প্রতিটি যাত্রীকে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে শহরতলির সব স্টেশনে এই ব্যবস্থা করা যাবে কিনা তা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে।
লোকাল ট্রেন যে চলছে কালীপূজার আগে তার ইঙ্গিত মিলেছিল সোমবার নবান্নে রাজ্য সরকার ও রেলের প্রতিনিধির বৈঠকে বসার পর। ওই বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, করোনা সুরক্ষায় সব রকম সতর্কতা মেনে চলতে। তাই তার জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে কীভাবে যাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে যথাযথ ট্রেন চালু করা যায়। এর জন্য রেল পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে সমন্বয় করে দু তিনদিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেদিনই জানিয়ে দেওয়া হয় চূড়ান্ত সিদ্দান্ত নেওয়া হবে ৫ নভেম্বর।
এরপর বুধবার স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও পরিবহণসচিব রাজেশ কুমার সিনহার সঙ্গে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি) প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর বৃহস্পতিবারও ফের রেল কর্তারা নবান্নে আসেন। রেলকর্তারা। সেখানেই ঠিক হয়, সামনের বুধবার থেকে চলবে রাজ্যের লোকাল ট্রেন। আপাতত ১৮১ জোড়া অর্থাৎ ৩৬২টি করে লোকাল ট্রেন চালানো হবে। তবে, নতুন কোনও সময়সূচী আপাতত চালু হচ্ছে না। পুরনো সময় সূচী মতোই চলবে ট্রেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct