আপনজন ডেস্ক: এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন খুবিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বর্তামান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেম কয়েকটি দেশের মুসলিমদের সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর তা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলি এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও তাতে কোনও কর্ণপাত করেনি। তার মাশুল গুনতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। এবারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিভিন্ন প্রদেশে রেকর্ড সংখ্যক মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাট দলের হয়ে। প্রথম বারের মতো নতুন পাঁচ মুসলিম বিজয়ী হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে।
এই মুসলিম বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে মহিলাই বেশি। এদের মধ্যে তিনজন নারী এবং পুরুষ রয়েছেন দু’জন। এছাড়াও দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন আরো দুই মুসলিম মহিলা।
ওকলাহোমা প্রদেশ থেকে প্রথম মুসলিম হিসেবে বিজয়ী হন মৌরি টার্নার। দিলাওয়ারা থেকে প্রথম মুসলিম হিসেবে মদিনাহ উইলসন এন্টোন বিজয়ী হন। কলোরাডো থেকে প্রথম মুসলিম হিসেবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে বিজয় অর্জন করেন ইমান জোদেহ। উইসকোনসিন রাজ্য থেকে কৃষ্ণাঙ্গ ও মুসলিম হিসেবে প্রথম বারের মতো বিজয়ী হন সামবা বালদেহ। ফ্লোরিডা রাজ্য থেকে সানসাইন অঙ্গরাজ্য থেকে ক্রিস্টোফার বেনজামিন প্রথম মুসলিম হিসেবে নির্বাচিত হন। ডেমোক্র্যাট থেকে মুসলিমদের এ বিজয় নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়।
বিজয় প্রসঙ্গে উইলসন এন্টন বলেন, তাঁর বিজয় ‘সমাজকে এ বার্তা দেয় যে আমরাও এ দেশের অংশ। এখানে আমরা প্রথম প্রজম্ম নাকি আফ্রিকান দাস বংশোদ্ভূত কেউ তা এখানে বিষয় নয়। আমরা সবাই এই দেশের অংশ।’ গাম্বিয়া বংশোদ্ভূত সামবা বালদেহ বলেন, ‘প্রথম মুসলিম হিসেবে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়া অবশ্যই উত্তেজনাকর মুহূর্ত। এমন সুযোগের জন্য আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞ। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমি। আমার অঞ্চলের সেবার করার সুযোগ গ্রহণে আমি খুবই আগ্রহী। তবে কেবল আমার নির্বাচন কেন্দ্রিক নয়, বরং মুসলিম, আফ্রিকান ও নানা বর্ণের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।’
বিজয়ী ক্রিস্টোফার বেনজামিন বলেন, ‘এই নির্বাচন এক দীর্ঘ ভ্রমণের অংশ। কৃষ্ণাঙ্গদের ঐতিহাসিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাল ফ্লোরিডা মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের আমি স্নাতক শিক্ষার্থী থাকাকাল থেকে আমি এর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। সেখানে আমার মেজর বিষয় ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান। এটি ওই যাত্রার একটি দুর্দান্ত সমাপ্তি। এতে ইতিহাস তৈরি করা এখন প্রায় সম্ভবপর।’
সরকারি পদে প্রার্থী হওয়া আমেরিকান মুসলিমদের প্রশিক্ষণদানকারী প্রতিষ্ঠান জাস্টিস এডুকেসন টেকনোলজি অ্যাডভোকেসি সেন্টার (জেইটিপিএসি)-এর পরিচাল মুহাম্মদ মিসাউরি বলেন, ‘তাঁরা আমেরিকার মুসলিম নেতৃবৃন্দের নতুন প্রজম্ম। তারা নানা উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করছে।’
মুহাম্মাদ মিসাউরি আরো বলেন, ‘মুসলিম নারী কর্মী, রাজনীতিবিদরা আমাদের স্বাস্থ্যসেবা, ফৌজদারি আইন, অভিবাসন নীতি ও আমেরিকার জীবনকে প্রভাবিত করে এমন সব ইস্যুতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাচ্ছে। এটি আমেরিকা ও পুরো বিশ্বে ইসলামভীতির সহিংস উত্থান প্রতিহত করতে সহায়তা করবে।’
এছাড়া দ্বিতীয় বারের মতো ফের কংগ্রেস প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে জিতেছেন ইলহাম ওমর ও রাশিদা তালিব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct