আর্য সেনগুপ্ত ,লালগোলা: মুর্শিদাবাদ জেলা সহ রাজ্যের একাধিক স্থানে বেশ কিছুদিন থেকে কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও এবং এনআইএ সীমান্ত জেলাগুলিতে তল্লাশি চালাচ্ছে। এই তল্লাশিতে নানা সূত্র খুঁজে পাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। সূত্রের খবর সীমান্তে পাচার সংক্রান্ত বিষয় জড়িত একাধিক ব্যক্তির নাম উঠে আসছে। দিন কয়েক আগে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই ও এনআইএ । তাতে উঠে এসেছে একাধিক নাম। তদন্তে একাধিক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে । তার মধ্যে লালগোলার বেশ কয়েকজনের নাম । তার মধ্যে মধ্যে অন্যতম আরমান আলী ওফফে কটা। সাইফুদ্দিন বিশ্বাস ওরফে সাফু। যিনি আবার গত পঞ্চায়েতের আগের পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন। জেলার কংগ্রেস নেতা সাংসদ অধীর চৌধুরী নিজে পাচার সম্পর্কে নানা বক্তব্য দিলেও তারই দলের প্রাক্তন কর্মীর নাম উঠে আসছে। ফলে শুধু তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম যে সবাই সীমান্তের নানা ব্যবসায় সহযোগিতা করেছে তা সন্দেহ করছে সিবিআই। জানা গেছে, লালগোলা সাইফুদ্দিন বিশ্বাস ওরফে সাফুর জীবন শুরু হয়েছিল তার গরুর রাখাল অর্থাৎ বাংলাদেশ গরু পাচার করত রাখাল হিসেবে । একজোড়া করে গরু নিয়ে যেত আর তাতে থেকেই তিনি এখন কয়েকশো কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। রয়েছে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল এর উল্টো দিকে বিরাট জমি। সেই জমি প্লট করে বিক্রি করছেন । তার রয়েছে লালগোলা থানার ঢিলছোড়া দূরত্বে নবাব আবাস লজ ।রয়েছে সম্রাট মার্কেট। এই সাইফুদ্দিন বিশ্বাস এখন পেট্রোল পাম্পের মালিক। সাইফুদ্দিন বিশ্বাসের রয়েছে প্রচুর জমি। যেগুলি লালগোলা ,ভগবানগোলা, জঙ্গিপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে। রয়েছে কয়েকটি ইটভাটাও। সিবিআই আরো জানতে পেরেছে এই সাইফুদ্দিন বিশ্বাস একটা সময় আরো এক হিরোইনের ব্যবসায়ী শরিফ চৌধুরীকে নিয়ে গরুর ব্যবসা করতে চেয়ে ছিলেন তার জন্য তিনি কোটি কোটি টাকাও খরচ করেছিলেন দিল্লি তে। কিন্তু তারা পেরে ওঠেনি । শেষ পর্যন্ত তাদের পুরনো মাফিয়ার কাছে হার মানতে বাধ্য হন। সাইফুদ্দিন বিশ্বাস 2018 সালে এনআইএর নজরে আসে। তাকে কলকাতা এনে এনআইএর দপ্তরেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সেসময় থেকে কয়েক বছর গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ মানুষ পাচার এর ক্ষেত্রেও তার নাম উঠে এসেছিল এনআইএর কাছে। সাইফুদ্দিনের সহযোগী শরীফ চৌধুরীর রয়েছে কয়েকটি ইটভাটা প্রচুর সম্পত্তি। সবই মূলত গরু এবং হিরোইনের ব্যবসা থেকে হয়েছে বলে আধিকারিকরা দাবি করেছেন।
তদন্তে আরো একজনের নাম উঠেছে তিনি হলেন আরমান আলী ওরফে কটা। গরু মাফিয়ার ডানহাত বলে লালগোলা বাসি চেনেন তাকে। ছোট্ট একটা কুড়ে ঘর থেকে বর্তমানে বিরাট অট্টালিকা তৈরি করেছেন লালগোলা সিন্ডিকেট মোড়ে। এই কটায় লালগোলার যাবতীয় বিষয়ে দেখাশোনা করেন তার নামে রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। মূলত লালগোলা বাসি জমি কেনাবেচার সূত্র ধরেই ছেলে কটা কে । এই কটার হাতে খড়ি গরু দিয়েই কমিশনের মাধ্যমে গরু পাচার করতে গিয়ে এখন তিনি হয়ে গেছেন জমি মাফিয়া। লালগোলা এলাকায় প্রচুর জমির মালিক তিনি। কয়লা বালি-পাথর সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা এই কটায়। ছোট্ট একটি ব্যবসায়ী থেকে কি করে লালগোলা বাজারের সিন্ডিকেট মোড়ে বিরাট অট্টালিকা তৈরি করেছে তা নিয়েও তদন্ত শুরু হবে। তার সিন্ডিকেট মোড়ের বাড়িতে প্রতিদিনই রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা রয়েছে। সেসব বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা বলে জানা গেছে।
হিরোইনের কারবারি শরীফ চৌধুরী কয়েক বছর আগে তৎকালীন লালগোলা থানার ওসি বিপ্লব কর্মকার গ্রেপ্তার করেন তাকে। লালগোলায় প্রচুর সম্পত্তির মালিক তিনি কয়েক বছর জেল খাটার পরে এখন জামিন এ মুক্ত ।কিন্তু এখনো পুরনো ব্যবসাটি সক্রিয় বলে খবর রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার কাছে। শরীফ চৌধুরীর রয়েছে কয়েকটি ইটভাটা, লালগোলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে বিরাট বড় গোডাউন, শহরের প্রচুর জমির মালিক তিনি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি এই সমস্ত অবৈধ সম্পদ নিয়ে খুব শীঘ্রই তদন্ত শুরু হবে এবং কারা কারা জড়িত সে বিষয়ে খোঁজ শুরু করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বলে জানা গেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct