আপনজন ডেস্ক: আমফান দুর্গতের সরকারি অর্থ সাহায্য দেওয়ার সময় রাজ্যজুড়ে শাসক দলের কিচু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে কাটমানি নেওয়ার। সে ব্যাপারে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, দলের কেউ এই কাটমানিতে যুক্ত থাকলে রেয়াত দেওয়া হবে না। কাটমানি নেওয়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অবিযোগ তাকলে সে যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন কড়া ব্যবস্তা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে কাজও হয়। বহু অভিযুক্ত রাজনৈতিক নেতা সাধারণ মানুষের আমফানের অর্থসাহায্য থেকে নেওয়া কাটমানি ফেরত দিতে থাকেন।
সেই বিতর্কের মাঝে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল।শুধু তাই নয় এই কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে নয়, এই অভিযোগ উঠেছে সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে তা্ই রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনদরদী প্রকল্পগুলির মধ্যে বিশ্ব দরবারে শিরোপা পাওয়া প্রকল্প হল কন্যাশ্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার সুবিধার্থে ছাত্রীদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য করে সরকার। যা প্রধানশিক্ষকের সহযোগিতায় ডিজিটাল কিছু নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে এই টাকা ছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়ে। সেই টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে ছাত্রীদের কাটমানি চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে নয়, এবার কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ উঠল সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে কাটমানি নেওয়ার মারাত্মক অভিযোগ উঠল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের জালালপুর হাই মাদ্রাসায়। ইতিমধ্যেই চতুর্থ শ্রেণীর ওই কর্মীর ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। যা মুহূর্তে ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ও অভিভাবকদের তরফে চাঁচোলের বিডিও এবং মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাদের অভিযোগ, চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের জালালপুর হাই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাফাজ্জল হোসেন ও স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী মোহাম্মদ হারুন ছাত্রীদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের ২৫ টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ছাত্রী পিছু তাদের ৫ হাজার টাকা করে কাটমানি দেওয়ার কথা বলা হয়। না দিলে কন্যাশ্রীর টাকা মিলবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও ছাত্রীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাফাজ্জল হোসেন।
উল্লেখ্য, বিদ্যালয়ের ওই চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর কাটমানি নেওয়ার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের তরফে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct