আপনজন ডেস্ক: অসমের এনআরসি কোঅর্ডিনেটর হীতেশ দেব শর্মার এক আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির কোঅর্ডিনেটর হীতেশ দেব শর্মা অসমের জেলা কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা থেকে ১০ হাজার ‘অবাঞ্ছিত’ ব্যক্তি’কে অবিলম্বে মুছে ফেলতে হবে। গত ১৩ অক্টোবর দেওয়া এনআরসি কোঅর্ডিনেটরের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
জানা গেছে, হীতেশ দেব শর্মা জেলা কমিশনারদের দেওয়া নির্দেশ সম্পর্কে বলেন, কিছু অবাঞ্ছিত ব্যক্তির নাম এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় ঢুকে গেছে। এই সব ‘অবাঞ্চিত ব্যক্তি’দের নাম নথিভুক্ত হয়েছে তাদেরকে বিদেশি ট্রাইব্যুনাল বিদেশি ঘোষণা করেছে। তাদেরকে নির্বাচন আধিকারিকরা ডাউটফূল ভোটার বা ডি ভোটার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এমনকী যাদের কিংবা যাদের উত্তররাধিকারদের বিদেশি ট্রাইব্যুনালে কেস পেন্ডিং আছে তাদেরকেও ডি ভোটার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
এনআরসির ৪(৬) ধারার তপসিলিতে নাগরিকত্ব আইন, ২০০৩ অনুযায়ী এই সমস্ত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শর্মা।
এই ডি ভোটার প্রসঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে বলেছে, এই ডি ভোটারদের অবশ্য ধরে রাখা উচিত। কিন্তু অসমের এনআরসি কোঅর্ডিনেটর ডি ভোটারদের ধরে রাখতে চান না। কারণ, তারা বিদেশি। এই কারণে তাদের নাম চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে জমিয়তের আইনজীবী ফুজাইল আইয়ুবি সুপ্রিম কোর্টে বলেন, অসম রাজ্য কোঅর্ডিনেটরের নির্দেশ ছিল ‘ভুল ধারণাবশত’। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট অসমে রাজ্য কোঅর্ডিনেটরের মাধ্যমে এনআরসি নিয়ে নজরদারি করেছে। রাজ্য সমন্বয়কারী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রদত্ত গাইডেন্স অনুসারে কাজ করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন একই বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়। কিন্তু অসমের রাজ্য কোঅর্ডিনেটর সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়ায় নির্দেশ দিয়ে ভুল ধারণা সৃষ্টি করেছেন।
জমিয়ত জানিয়েছে, শর্মার বিবৃতি তাকে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। তাই তার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জমিয়ত বিরোধিতা করেছে। শর্মা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন। সুপ্রিম কোর্টে তাই কেন্দ্র অসম সরকারের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গত বছরের আগস্টে প্রকাশিত হয়েছিল চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। প্রায় ৩.৩ কোটি আবেদনকারীদের মধ্যে প্রায় ৬ শতাংশ বা ১৯ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct