আপনজন ডেস্ক: অবশেষে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার মেট্রোপলিটন আদালত ১২জন ইন্দোনেশীয় তবলিগি জামাত কর্মীর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিল। এই ১২জন ইন্দোনেশীয় তবলিগির বিরুদ্ধে খুন করার চেষ্টা সহ অন্যান্য অভিযোগ বান্দ্রা থানার পুলিশ খারিজ করে দেওয়ার মাস খানেক পর গত বুধবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়দেও ওয়াই ঘুলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে তবলিগি সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল হয়। বিজেপি এবং এক শ্রেণির মিডিয়া দেশে করোনা সংক্রমণের জন্য তবলিগিদের দায়ী করলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তবলিগিদের বিরুদ্ধে ভিসা আইন লংঘনেরও অফিযোগ ওঠে। যদিও নিজামুদ্দিন মারকাজের তরফে দাবি করা হয়, দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণার কারণেই বিদেশি তবলিগিরা যে যার দেশে ফিরতে পারেননি। দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে তবলীগি জামাতের সম্মেলনে অংশ নিতে প্রায় ৩৫০০জন বিদেশি তবলীগি এসেছিলেন। তাদের অনেকেই ভিসা আইন সহ অন্যান্য বিধি ভঙ্গের অভিযোগে জেলবন্দি হন।
এরপর কিছুদিন আগে বোম্বে হাইকোর্ট এক রায়ে বলে, তবলীগি জামাত কর্মীদের বালির পাঁঠা করা হয়েছে। তাই তাদের উপর থেকে সব এফআইআর তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি নালাওয়াড়ে ও বিচারপতি এম ভি সেউলিকারের গঠিত বোম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বোম্বে হাইকোর্টে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেও নিম্ন আদালতের রায়ে তাদের দেশে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যদিও ক্রমে ক্রমে নিম্ন আদালতের নির্দেশ পেয়ে তারা ছাড়া পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই ১২জন ইন্দোনেশীয় তবলিগি।
এই ইন্দোনেশীয় তবলিগিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে আইনজীবী ইশরাত খান আদালতের কাছে আবেদনে জানান, করোনা সংক্রমণের জন্য লকডাউন ঘোষণার ফলে এই সব বিদেশি তবলিগি আটকে ছিলেন। বোম্বে হাইকোর্টের রায়ের কথা তুলে ধরে তাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
আইনজীবী ইশরাত তারিখ উল্লেখ করে আদালতকে বলেন, এই ইন্দোনেশীয় তবলিগিরা দিল্লি এসেছিলেন তিন দফায় ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২ মার্চ ও ৬ মার্চ। তারপর দিল্লি তেকে ট্রেন যোগে মুম্বাই রওনা দেন ৭ মার্চ। এরপর দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় মুম্বাইয়ে থেকে যান। এই পরিস্থিতিতে তারা দেশ ছাড়তে পারছেন না। তাদেরকে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো করোনা টেস্ট করেছেন।
তাদের সবারই টেস্টে নেগেটিভ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগেরও প্রমাণ মেরেনি। তাই তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হোক।
এরপর বান্দ্রার মেট্রোপলিটন আদালত ওই ১২ জন ইন্দোনেশীয় তবলিগিতে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন বুধবার।
বান্দ্রা মেট্রোপলিটন আদালতের রায়:
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct