আপনজন ডেস্ক: প্রায়ই সময় শোনা যায় স্মার্টফোন বিস্ফোরিত হচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনাও এখন অহরহ। কেন মোবাইল ফোন বিস্ফোরিত হয়? ভাবছেন কমদামী ফোন হয়তো বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু না বিশ্বের নামীদামী ফোন নির্মাতা যেমন অ্যাপল ও স্যামসাং এর তৈরি ফোনও বিস্ফোরিত হওয়ার রেকর্ড আছে। ২০১৬ সালে স্যামসাংয়ের ফ্ল্যাগশিপ ফোন গ্যালাক্সি নোট সেভেন বিস্ফোরণের ঘটনায় তারা পুরো মডেলটিই মার্কেট থেকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তাই এই ব্যাপারে আপনার সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। স্মার্টফোনের সব অংশ বিস্ফোরণের কিন্তু জন্য দায়ী নয়। মূলত এর ব্যাটারিটি বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনা বেশি দেখা যায়। বাকী যন্ত্রাংশ আসলে বিস্ফোরিত হওয়ার মত তেমন কিছু দিয়ে তৈরি নয়। ফোনে ব্যবহৃত লিথিয়াম আয়ন বা লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি যথেষ্ট উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি, এবং এই ব্যাটারিগুলো স্ট্রেস নেওয়ার উপযোগী করেই বানানো হয়েছে। তবে তা সত্বেও দুটি কারণে এসব ব্যাটারিও কখনো কখনো বিস্ফোরিত হতে পারে। প্রথমটি হল, পাঙ্কচার বা লিকেজ। হাত থেকে পড়ে, অত্যাধিক চাপে, কিংবা আঘাত লেগে আপনার ব্যাটারির সেলগুলো পাঙ্কচার হয়ে এদের মাঝে শর্ট সার্কিট হয়ে ব্যাটারিতে আগুন ধরতে পারে। আর সস্তা, আজে বাজে ব্র্যান্ডের ব্যটারিগুলোতে মাইক্রস্কোপিক অনেক ভেজাল মিশ্রিত থাকতে পারে। এগুলোও অনেক ক্ষেত্রেই সেলগুলোর সংস্পর্শে এসে শর্ট সার্কিট ঘটাতে পারে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে কেন বিস্ফোরণ ঘটে এটা জানতে হলে আগে জানতে হবে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি গঠন সম্পর্কে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির দুটি ইলেক্ট্রোড থাকে- একটি ধনাত্মক আয়নের ক্যাথোড, অন্যটি ঋণাত্মক আয়নের অ্যানোড। দুটি অংশকে আলাদা করে রাখে খুবই পাতলা একটি প্লাস্টিক পর্দা। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি যখন চার্জ দেওয়া হয়, তখন ক্যাথোড থেকে ইলেক্ট্রোলাইট বা লিথিয়াম আয়নগুলো বল প্রয়োগের কারণে অ্যানোডের অংশে ধাবিত হয়। একইভাবে ব্যাটারির চার্জ যখন খরচ হতে থাকে বা কমতে থাকে, তখন একেবারে উল্টা ঘটনা ঘটে। লিথিয়াম আয়ন তখন অ্যানোড থেকে ক্যাথোডের দিকে ছুটতে থাকে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এতো কাজের, সেই একই কারণেই কিন্তু এ ধরনের ব্যাটারিতে বিস্ফোরণ ঘটে। চার্জারে ত্রুটির কারণেও লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যা থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct