আপনজন ডেস্ক: আগে রোগ বালাইয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে অনেকে প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধ ব্যবহার করতেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানেও ভেষজ বা উদ্ভিজ্জ প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার সুপ্রাচীনকালের। কিন্তু প্রচলিত হারবাল পণ্য কি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৈরি ওষুধের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বের ৮০ শতাংশ মানুষ রোগবালাইয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে নানা ধরনের হারবাল বা প্রাকৃতিক ওষুধ ব্যবহার করে থাকে। শুধু তা–ই নয়, পশ্চিমা বিশ্বেও ‘ওভার দ্য কাউন্টার মেডিসিন' হিসেবে জনপ্রিয় এই অলটারনেটিভ বা হারবাল পণ্যগুলো। আমেরিকার ২৫ শতাংশ মানুষ নিয়মিত নানা শারীরিক সমস্যায় এগুলো ব্যবহার করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ভেষজ বা উদ্ভিজ্জ প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার আজকের নয়। সুপ্রাচীনকাল থেকেই নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহৃত হয়ে আসছে ওষুধে। আমরা সবাই জানি যে কুইনিনগাছের ছাল থেকে তৈরি হয়েছে ম্যালেরিয়ার ওষুধ। ব্যথানাশক মরফিন তৈরি হয় ওপিয়াম বা আফিম থেকে। হার্টের ওষুধ ডিজিটালিস বা অ্যাসপিরিনও আসে একধরনের উদ্ভিদ থেকেই। কিন্তু ওষুধ আর এ ধরনের ভেষজ পণ্যের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। একটি ওষুধ, তা যে উৎস থেকেই তৈরি হোক, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার নানা পর্যায় পেরিয়ে তবেই অনুমোদিত হয়। থাকে নির্দিষ্ট মাত্রা বা ডোজ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লেবেল আর কোন রোগে কীভাবে ব্যবহৃত হবে তার নির্দেশিকা। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কারও সেই ওষুধ সেবন করার এখতিয়ার নেই। ভেষজ উপাদানে এগুলো অত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করা হয় না। সাধারণের ব্যবহারের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় বিবেচনায় এফডিএ এগুলোকে বাজারে বিক্রি করার অনুমতি দিয়ে থাকে। এর ব্যবহারে ব্যবস্থাপত্রও লাগে না। কিন্তু কোনো একটি রোগ সারিয়ে তুলতে এটি কতটা কার্যকর, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। সাধারণত এগুলো রোগ সারাই বা চিকিৎসার লক্ষ্যে নয়, বরং রোগের উপশম, আরাম আর সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct