গত এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ভারতের প্রায় আড়াই কোটি মাসিক বেতনভুক্ত চাকরিজীবী কাজ হারিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার এই চিত্র ফুটে উঠেছে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি নামের একটি পরামর্শক সংস্থার পরিসংখ্যানে। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থ-বছর শেষে যেখানে বেতনভুক্ত চাকরিজীবীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৯ কোটি। সেখানে আগস্টে তা নেমে এসেছে ৬ কোটি ৫০ লাখে। অর্থাৎ, কমেছে প্রায় আড়াই কোটিতে।এপ্রিল, মে মাসে তো অনেকে কাজ হারিয়েছেন, জুলাই ও আগস্টেও সেই সংখ্যা যথাক্রমে ৪৮ এবং ৩৩ লাখ। যদিও ভারতে চাকরির বাজারে এই ধস শুধু মহামারি কিংবা লকডাউনের কারণে নয়। করোনা শুরুর আগে থেকেই ভারতের অর্থনীতির অবস্থা ছিল খারাপ। করোনায় মধ্যে তার কঙ্কালসার চেহারা ধরা পড়েছে। জিডিপির আকার চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সংকুচিত হয়েছে। ফলে দেশটির আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা। করোনার বছরে ভারতে গড় বেতন বৃদ্ধির হার কোন তলানিতে ঠেকেছে, সে বিষয়ে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে ডেলয়েট-তুশ। সংস্থাটির অন্যতম এক কর্তা বলেন, 'গত কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতির রেখচিত্র এবং মুনাফার হার নিম্নমুখী হওয়ার কারণে ভারতে গড় বেতন বৃদ্ধির গতির এই ঢিমেতাল। এ বছরে করোনা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার মুখে ঠেলে দেওয়ার পরে বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা কিংবা একেবারে সামান্য হারে তা দেওয়া ছাড়া অন্য পথ তেমন খোলা ছিল না নিয়োগকারীদের সামনে।’এর ফলে করোনার কারণে এ বছর চাকরিজীবীদের ভুগতে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বেহাল অর্থনীতির খেসারত গত কয়েক বছর ধরেই দিচ্ছেন তারা। অথচ চাকরিজীবীদের কেনাকাটার ওপরে যেহেতু বহু পণ্য-পরিষেবার চাহিদা অনেকখানি নির্ভরশীল, তাতে টান পড়ার মাসুল গুনে ঘুরে দাঁড়াতে খেই হারিয়ে পেলেছে ভারতের অর্থনীতিও।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct