আপনজন ডেস্ক: ব্রাজিল ফুটবলে তাহলে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলে যাচ্ছে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ কাল জানিয়েছে, লা লিগার বর্তমান মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়বেন কার্লো আনচেলত্তি। তাঁর জায়গায় রিয়ালে নতুন কোচের দায়িত্ব নেবেন জাবি আলোনসো। আর আনচেলত্তি যাবেন কোথায়? ফুটবলের খুব অল্প খোঁজখবর রাখা ব্যক্তিও এখন জানেন, আনচেলত্তির পরবর্তী ঠিকানা ব্রাজিল জাতীয় দল। অনেক দিন ধরেই এই ইতালিয়ান কোচের পিছু ছুটছিল ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলের ভাগ্যে আনচেলত্তি-শিকে ছিঁড়তে যাচ্ছে। দ্য অ্যাথলেটিক গত সপ্তাহে জানিয়েছে, রিয়ালের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে আনচেলত্তির, তাঁকে ছাড়তে রাজি হয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটি। অর্থাৎ, লা লিগার মৌসুম শেষে ব্রাজিলের কোচ হতে আর বাধা নেই আনচেলত্তির।
সেটা হলে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল-দর্শনের একটি জায়গায় দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ হতে পারে!
অর্থাৎ, হিসাবে মিল পড়বে না। কোথায়? কোচ নিয়োগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের যে দর্শন সেখানে। সেই দর্শনটি হলো দেশি কোচ। সব সময় না হলেও বেশির ভাগ সময় দেশের কোচদের হাতেই জাতীয় দলের ভার অর্পণ করেছে সিবিএফ। ইতালিয়ান আনচেলত্তির হাতে দায়িত্ব অর্পণ করলে ভেঙে যাবে সেই ধারা। কত দিনের ধারা? ছয় দশকের, মানে ৬০ বছর। ব্রাজিল জাতীয় দলে সর্বশেষ বিদেশি কোচ দেখা গেছে ১৯৬৫ সালে...এবং সেখানেও আছে তাঁদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের অবদান।
সেই কোচ যে আর্জেন্টাইন! ফিলপো নুনেজ। লা লিগার দল আলাভেসের কোচ এদুয়ার্দো কুদেত সম্পর্কে তাঁর ভাতিজা। নুনেজের বিষয়ে আসার আগে একটি তথ্য জানিয়ে রাখা যায়। ঐতিহাসিকদের নানা রকম সূত্র ধরে সাধারণ বিশ্বাস হলো, ব্রাজিল জাতীয় দল প্রথম ম্যাচ খেলেছে ১৯১৪ সালে। রিও ডি জেনিরো ও সাও পাওলো থেকে বাছাই করা একটি দল খেলেছিল ইংলিশ দল এক্সেটর সিটির বিপক্ষে। তখন থেকে এই ১১১ বছরে ব্রাজিল জাতীয় দলে মাত্র তিনজন বিদেশি কোচ দেখা গেছে। এই তিন কোচ মিলে মোট ৭টি ম্যাচে ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। সবার আগে এসেছিলেন র্যামন প্লাতেরো। উরুগুয়ের এই কোচ ১৯২৫ কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কোচ ছিলেন। ব্রাজিলিয়ান হোয়াকিম গিমারায়েসের সেবার কোচ হওয়ার কথা থাকলেও টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পান তিনি। তখন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ভাস্কো দা গামার কোচ পদে থাকা প্লাতেরোকে জাতীয় দলের ফিল্ড কোচ বানিয়ে সেবার কোপা আমেরিকায় গিয়ে রানার্সআপ হয় ব্রাজিল। চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। কোপায় ব্রাজিলের ৪টি ম্যাচে কোচ ছিলেন উরুগুয়েকে ১৯১৭ সালে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বানানো প্লাতেরো। ১৯২৫ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২০ দিন ব্রাজিলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন একই দিনে ভাস্কো দা গামা ও ফ্লামেঙ্গোকে কোচিং করানোর নজির গড়া প্লাতেরো।
রেফারি থেকে কোচ হয়ে প্রথম মৌসুমেই সাও পাওলোকে রাজ্য লিগ জেতানো পর্তুগিজ জোরেকা ব্রাজিলের দ্বিতীয় বিদেশি কোচ। তবে প্লাতেরোর মতোই সহকারী ছিলেন। ফ্লাভিও কস্তার সহকারী হিসেবে উরুগুয়ের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান জোরেকা। ১৯৪৪ সালের ১৪ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত মাত্র ৪ দিন ব্রাজিলের কোচ পদে ছিলেন অপেশাদার বক্সার হিসেবে দুটি ম্যাচ জেতা জোরেকা।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct