আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে মতবিরোধ ও দ্বন্দ্বের পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের শীর্ষ নির্বাহী রোনেন বার।
সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিন বেতের শীর্ষ নির্বাহী রোনেন বার জানিয়েছেন, আগামী ১৫ জুন পদত্যাগ করবেন তিনি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে রোনেন বলেন, ‘আমি আমার ৩৫ বছরের চাকরিজীবনের ইতি টানছি। আগামী ১৫ জুন আমি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সময়সীমার মধ্যে একজন যোগ্য ও পেশাদার উত্তরসূরীকে বেছে নেওয়া এবং তার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।’
শিন বেত ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রভাবশালী নিরাপত্তা সংস্থা। এই সংস্থাটি সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী হামলার তদন্তের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস যে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল, সেটির প্রধান তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকায় ছিল শিন বেত। তবে গত বেশ কয়েক মাস ধরে নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধাকালীন মন্ত্রিসভার সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল শিন বেতের। তদন্তের গতিপ্রকৃতি ও ফলাফল নেতানিয়াহু এবং তার মন্ত্রিসভার কট্টরপন্থি সদস্যদের প্রত্যাশা অনুযায়ী না হওয়ায় শিন বেত এবং রোনেন বারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলেন তারা। এর মধ্যেই গত ১৬ মার্চ নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে বলেন, অনেক দিন আগেই তিনি রোনেনের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। নেতানিয়াহু আরও বলেছিলেন যে রোনেন যদি তার স্বীয় পদে বহাল থাকেন, তাহলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং সরকারি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
এরপর রোনেনকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টাও করেছিলেন নেতানিয়াহু। কিন্তু দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও তীব্র সমালোচনার পর সেই চেষ্টা থেকে বিরত হতে হয় তাকে। পরে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট রোনেনকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টার ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই জিম্মিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার প্রদানের দাবিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল ইসরায়েলজুড়ে। নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকার এসব বিক্ষোভকে আমল না দেওয়ায় দিন দিন এর তেজ আরও বাড়তে থাকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ নস্যাৎ করতে রোনানকে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে গুপ্তচর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু, কিন্তু এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন শিন বেতপ্রধান। তারপর থেকেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় তার।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct