আপনজন ডেস্ক: আগামী ২৬ এপ্রিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ওয়াকফ আইন বিরোধী সম্মেলনের ডাক দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। ওইদিন দুপুর ১.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সভা িকরার অনুমতি চেয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের রাজ্য নেতারা গত ১২ এপ্রিল কলকাতার ২৪৬ আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোডে সেনাবাহিনীর বেঙ্গল এরিয়ার জমি সংক্রান্ত বিষয়ক সদর দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার জন্য ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্নেল ২১ এপ্রিল জানিয়ে দেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডকে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ২৬ এপ্রিল সভা করার জন্য অনুমতি দিতে পারছে না। এর বিরুদ্ধে কলকাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ল বোর্ডের রাজ্য নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। তাতেও কিন্তু ব্রিগেডে সভার করার নির্দেশ মিলল না। তবে, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তার আদেশে সেনাবাহিনীকে বলেন, সভার করার অনুমতি বাতিল করার কারণ কিংবা সভার অনুমতি সংক্রান্ত বিষয়টি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানিয়ে দিতে হবে আবেদনকারীকে। সেক্ষেত্রে ইমেইল করেও জানানো যেতে পারে। ফলে, অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের ব্রিগেডের সভা। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের তরফে সরাসরি ব্রিগেডে আলোচনা সভার করার অনুমতি না মেলায় আর্জি জানানোর মধ্যে কোনও গলদ ছিল কিনা সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশের জন্য ব্রিগেডে সভা করার অনুমতি চাওয়া হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ল বোর্ড ৫০ হাজার জনকে নিয়ে ব্রিগেডে প্রকাশ্য জনসভা নয়, আলোচনা সভা করতে চেয়ে আবেদন করেছে। তাই বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
উল্লেখ্য, পার্সোনাল ল বোর্ডের হয়ে এদিনের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম, গোপা বিশ্বাস ও ঋষভ আহমেদ খান। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আইনজীবী অশোক কুমার চক্রবর্তী, কুমারজ্যোতি তিওয়ারি ও অনামিকা পাণ্ডে। এছাড়া, রাজ্য সরকারের পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, সিরসন্য বন্দ্যোপাধ্যায়, বিবেকানন্দ বোস ও দেবাংশু দিন্দা।
এদিনের শুনানিতে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভা করার অনুমতির বিরোধিতা করেন কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী অ্যাডিশনাল সলিসটর জেনারেল অশোক কুমার চক্রবর্তী। তিনি আদালতকে বলেন, পার্সোনাল ল বোর্ড ওয়াকফ আইন নিয়ে আলোচনা সভা করতে ৫০ হাজার লোকের জমায়েত করতে চায়। যদিও বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এ বিষয়ে অশোক কুমার চক্রবর্তী মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, ওয়াকফ বিরোধী বিক্ষোভের জেরে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে দাঙ্গা বাধে। পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, আগামী ২১ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সেনাদের প্রশিক্ষণ শিবির হবে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। ফলে এই সময়ে ব্রিগেডে সভার অনুমতি যেন না দেওয়া হয় তার জন্য আর্জি জানান আদালতের কাছে।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার কারণে আগামী তিনদিন ব্রিগেডে মিটিং মিছিল করা বন্ধের নির্দেশ রয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে। তাই সাতদিন পরে এই মিটিং করতে পারেন। বিচারপতি ল বোর্ডের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে ৩ মে সেনাবাহিনীর কাছে নতুন করে আবেদন জানাতে বলেন। আর সেনাবাহিনীকে তার উত্তর দিতে বলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct