নিজস্ব প্রতিবেদক, শালবনি, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনিতে জিন্দাল গ্রুপের দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। ১৬,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে জেএসডব্লিউ এনার্জির উদ্যোগটি ১৫,০০০ এরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা রাজ্যের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে। জিন্দাল গ্রুপ অন্যান্য শিল্পকে ইজারা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রকল্প সাইটের কাছে প্লাগ-ইন সুবিধা সহ ২০০০ একর শিল্প পার্কও চালু করেছে।
শালবনিতে যে জমিতে পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে তা আদতে কৃষকদের।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘোষণায় নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করলেন শালবনি এবং পার্শ্ববর্তী প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ। সোমবার শালবনিতে জিন্দল গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। শালবনিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন জিন্দাল গোষ্ঠীর শীর্ষকর্তারাও। শিলান্যাসের ৪২ মাসের মধ্যে প্রথম ইউনিট এবং ৪৮ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে বলে জানানো হয়। এখানেই একদিকে কর্মসংস্থান অপরদিকে বিরোধীদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা বাংলার জন্য ঐতিহাসিক প্রকল্প। এর আগে রাজ্যে এমনটা কখনও হয়নি। আগে লোকে বলত লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার। এই প্রকল্পের কারণে পরবর্তী ১০০ বছর বিদ্যুতের সমস্যা হবে না রাজ্যে।’ পরদিন ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার তিনি মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন গোয়ালতোড়ের একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট–সহ একাধিক নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে হাজির ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার এবং সাংসদ জুন মালিয়া। আর শালবনিতে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে যান জিন্দলদের কারখানায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘যারা বলে হচ্ছে না হচ্ছে না, তাঁদের বলব এখানে এসে দেখুন। সৌরভ, জুন ঠিকই বলেছে। পূর্ব ভারতে এত বড় প্রকল্প আগে হয়নি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ কাজ পাবেন। আরও বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। বাংলার এটা ঐতিহাসিক প্রকল্প। শালবনির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এই রাজ্যের ২৩ জেলাই উপকৃত হবে। ১৫ হাজার মানুষজনের কর্মসংস্থান হবে। ১৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। আগামিকাল সোলার প্ল্যান্টের উদ্বোধন করব।’ এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমার সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু আমায় উপেক্ষা করতে পারবেন না। আগে বলা হত, লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার। এখন ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আরও দুটো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে জিন্দলদের। বাংলায় ছ’টি ইকোনমিক করিডর হয়েছে। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরেই ৩৭০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দেউচা পাঁচামিতে বিশাল কোল ব্লক তৈরি হচ্ছে। ১ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩০ তারিখ জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে দিঘায়। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে পাঁচটি বড় কোম্পানি বিপুল টাকা বিনিয়োগ করবে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct