হাসিবুর রহমান ও বাইজিদ মন্ডল , ভাঙড়, আপনজন: ইন্তেকাল করলেন বিশিষ্ট জননেতা আবদুর রেজ্জাক মোল্লা। (ইন্না লিল্লাহি...)। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের মিলন বাজারের কাছে বাঁকড়া গ্রামের বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে রেজ্জাক মোল্লার বয়স হয়েছিল ৮১। তার পারিবারিক সূত্রে খবর, গ্রামেই নামাজ-এ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দেহ সমাধিস্থ করা হয়। গত চার-পাঁচ বছর ধরে ওই বাড়িতেই থাকছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালে ভাঙড় বিধানসভা থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। নিজেকে ‘চাষার ব্যাটা’ বলে পরিচয় দিতে ভালবাসতেন। তিনি প্রথম বার মন্ত্রী হন ১৯৮২ সালে। বামফ্রন্টের ভূমি সংস্কার দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। জ্যোতি বসু এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দু’জনেরই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন রেজ্জাক মোল্লা।বুদ্ধদেবের সরকারে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে রেজ্জাকের সম্পর্ক কখনওই তেমন ‘মসৃণ’ ছিল না। রেজ্জাক বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধদেব সম্পর্কে বহু ‘বিরূপ’ মন্তব্য করেছিলেন। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারের যখন পতন হয়, সে সময়ে রেজ্জাক বুদ্ধদেব সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘হেলে ধরতে পারে না, কেউটে ধরতে যায়।’ এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সেই সময়। ’২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন রেজ্জাক। সে বার ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্ত্রিসভার মন্ত্রীও হন। ছিলেন ২০২১ সাল পর্যন্ত।
রেজ্জাকের প্রয়াণে নিজের এক্স হ্যান্ডলে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই এক সময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি তাঁর পরিবারবর্গ, অসংখ্য অনুগামী ও শুভানুধ্যায়ীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct