দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: মালদহে আবারো প্রকাশ্যে দিবালোকে বালি চুরির ঘটনা মালদায়। মহানন্দায় জেসিবি নামিয়ে তুলে ফেলা হচ্ছে দেদার বালি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে কোটি কোটি টাকার কারবার। বালি মাফিয়াদের দাপটে তটস্থ স্থানীয়রা। ইতিমধ্যেই নদীবক্ষে তৈরি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্ত। অভিযোগ,বেআইনি কারবারের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী চক্র। সংবাদ মাধ্যম ছবি তুলতে গেলে ছবি তুলতে বাধা সাংবাদিকদের হুমকি।একেই বোধহয় বলে বিনা পুঁজির ব্যবসা। সরকারকে রয়ালিটি না দিয়ে, দিনের পর দিন প্রকাশ্যে চলছে বালি লুটের কারবার। দিনভর নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জেসিবি আর ট্রাক্টর। সবমিলিয়ে দৈনিক বিপুল টাকার কারবার। এই কারবার চলছে মালদার ইংরেজবাজারের যদুপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর এলাকায়। স্থানীয়ভাবে মহানন্দার এই এলাকা পরিচিত “মেলা ঘাট” নামে। জানাগিয়েছে, প্রথমে নদীবক্ষ থেকে জেসিবি দিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। এরপর ট্রাক্টরে বোঝাই করে নিয়ে গিয়ে জমা করা হচ্ছে খানিক দূরে প্রায় নির্জন এলাকায়। এখানে বিপুল পরিমাণ বালির মজুত ভান্ডার দেখে সহজেই বোঝা সম্ভব কি বিপুল পরিমাণ বালি লুট হচ্ছে নদী থেকে। উচ্চমানের না হলেও এই ধুস বালির চাহিদা প্রচুর। নতুন বাড়ি তৈরির সময় ভিত থেকে রাস্তা নির্মাণ বহু ক্ষেত্রেই এইবালির ব্যবহার হয়। যা প্রতি টলি পিছু সাতশো থেকে এক হাজার টাকা হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। বালি লুটের এই অবৈধ কারবারের কথা স্বীকার করেছে জেসিবি চালক থেকে ট্রাক্টর কর্মী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই অবাধ বালি চুরির কারবার দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। মাঝে একবার পুলিশ হানা দিয়ে গাড়ি আটক করায় কয়েকদিন বন্ধ ছিল। এখন ফের যে কার সেই। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এই অবৈধ কারবারের পেছনে রয়েছে এলাকার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী শিস মোহম্মদ। যিনি এলাকায় পরিচিত ‘জুলুম’ নামে। যদিও মালদার ভূমি রাজস্ব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবহুতী ইন্দ্র জানিয়েছেন এক্ষেত্রে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।এদিকে বালি চুরির ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল করলেই এইসব অসাধু ও বেআইনি কারবারের লাইসেন্স মিলে। এমনই কটাক্ষ বিজেপির মালদা জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের। যদিও ইংরেজবাজারের তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরির পাল্টা দাবি, কেউ ব্যক্তিগতভাবে অসাধু কারবার করলে দল যুক্ত নয়। বেআইনি হলে কড়া পদক্ষেপ নিক প্রশাসন।সংবাদমাধ্যমে খবর পেয়ে। জেলাশাসকের নির্দেশে মালদহে নদীর বালি লুটের ঘটনায় তৎক্ষণাৎ প্রশাসনিক অভিযান। অবৈধ বালি চুরি চক্রের চাই তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী শিস মোহম্মদ ওরফে জুলুমের বাড়িতে হানা মহকুমা শাসক, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর ও পুলিশ প্রশাসন। বাড়ি থেকে বেপাত্তা জুলুম শেখ ও তাঁর পঞ্চায়েত সদস্য স্ত্রী। এরপর আম বাগানের ভেতর শহর একাধিক বালি মজুত ভান্ডারেও হানা। মহানন্দা নদীর ঘাটে নেমে বালি খননের ছবি দেখে তাজ্জব মালদহের মহকুমা শাসক পঙ্কজ তামাং। প্রশাসনের সামনে তৃণমূল নেতার অবৈধ কারবার নিয়ে সরব স্থানীয়রা। বহু বছর ধরে কোটি কোটি টাকার কারবার চলছে মহাকুমা শাসককে জানালেন স্থানীয়রা। প্রশাসনের তদন্তে জুলুমের অন্তত চারটি বালি মজুত ভান্ডারের হদিশ।দীর্ঘদিন ধরে বড়সড় অপরাধ, স্বীকার মহাকুমা শাসকের। বড় অংকের আর্থিক জরিমানা সহ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ বলে জানান মহকুমা শাসক।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct