নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: অবিলম্বে শিক্ষা মিত্রদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিয়ে কাজে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সাধারণ শিক্ষকদের মতো শিক্ষামিত্রদেরও ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করার অধিকার রয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রেখেই গত শুক্রবার রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আর তাতেই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করে শিক্ষা মিত্রদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার মালদহ জেলার একাংশ শিক্ষামিত্র হরিশ্চন্দ্রপুরে এক বেসরকারি নার্সারী স্কুলে প্রেস মিট করে অবিলম্বে তাদের নিয়োগ করার দাবি করেন। বাংলার পিছিয়ে পড়া,স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে ২০০৪ সালে সর্বশিক্ষা অভিযানের আওতায় শিক্ষা মিত্র নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।তখন মাসিক ১০০০-২৪০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হত। সাত বছর কাজ করার পর ২০১১ সালে রাজ্য সরকার অলিখিতভাবে তাদের বসিয়ে দেন।
শিক্ষামিত্রদের ভাতা বন্ধ করে দেয়। এমনকি ৬০ বছরের আগেই চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বকেয়া বেতন এবার মিটিয়ে সবাইকে আবার কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় সিঙ্গল বেঞ্চ। সেটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখেন ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষা মিত্রদের পদ পাল্টে দিয়ে সরকার তাঁদের স্বেচ্ছাসেবক করে দেন।এছাড়া কেন শিক্ষা মিত্ররা ৬০ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারবে না? এই প্রশ্ন তুলে এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়। তাতে সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চে সিলমোহর পড়ায় শিক্ষা মিত্ররা পারবেন ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করতে। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। ওই মামলাতেই সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে বহাল রেখে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, বকেয়া বেতন মিটিয়ে শিক্ষা মিত্রদের দ্রুত কাজে ফেরাতে হবে। শিক্ষামিত্র সাহানাওয়াজ আলি জানান,গত শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, শিক্ষামিত্ররাও ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন। পাশাপাশি এনিয়ে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়েছে, তাঁদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে রাজ্যকে ওই সব শিক্ষামিত্রের কাজে ফেরাতে হবে।রাজ্যে মোট ৩ হাজার ৩৩৭ জন শিক্ষাবন্ধু রয়েছেন।এদের মধ্যে অনেকেই অবসর হয়ে গিয়েছেন,কেউ মারা গিয়েছেন। আরেক শিক্ষা মিত্র সুশান্ত উপাধাধ্যায় বলেন, আমরা নিজেদের অধিকারের জন্য বিকাশ ভবন,শিক্ষামন্ত্রী ও নবান্ন অভিযান করে কোনও সুরাহ না পেয়ে পথে বসি।পরে সরকার স্কুলে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগ করান। বছর দেড়েক ২৪০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার পর সেটাও বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০১৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করি।২০২৩ সাল পর্যন্ত কেস চলে। গত শুক্রবার আমেদের পক্ষে রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকার কবে নিয়োগ করায় এখন সেটাই দেখার বিষয়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct