আপনজন ডেস্ক: বার্সেলোনা ৪ : ০ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। অবিশ্বাস্য! ২০২৫ সালে বার্সেলোনার পারফরম্যান্সকে এই একটি শব্দেই শুধু ব্যাখ্যা করা যায়। এই বছর ২৩ ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত হারেনি তারা। ৪টি ড্রয়ের বিপরীতে পেয়েছে ১৯ জয়। যার শেষটি বার্সা পেয়েছে বুধবার রাতে। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে বার্সার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। প্রথমার্ধে ১ গোল হজম করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে গতবারের রানার্সআপরা। বার্সার কাছে ডর্টমুন্ড হেরেছে ৪-০ গোলে। এই হারে অ্যাওয়ে ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনালের দুয়ারে প্রায় পৌঁছে গেল বার্সা।
আর ২৩ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বার্সার হয়ে পঞ্জিকাবর্ষে টানা অপরাজিত থাকার নতুন রেকর্ড গড়লেন জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। ২০১৬ সালে লুইস এনরিকের অধীন বার্সা অপরাজিত ছিল ২২ ম্যাচ। সেটি ছাড়িয়ে এবার ২৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার নতুন কীর্তি গড়ল ফ্লিকের বার্সা।
বার্সার জয়ে আজ গোল করেছেন আক্রমণভাগের তিন তারকার প্রত্যেকেই। রবার্ট লেভানডফস্কি করেছেন জোড়া গোল। আর একটি করে গোল করেছেন রাফিনিয়া ও লামিনে ইয়ামাল।
ঘরের মাঠে ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই ডর্টমুন্ডের ওপর চড়াও হয় বার্সেলোনা। ৫ ও ৭ মিনিটে পরপর দুইবার দারুণ দক্ষতায় ডর্টমুন্ডকে গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। ইয়ামালের প্রচেষ্টা নষ্ট করার ২ মিনিট পর ঠেকিয়ে দেন লেভানডফস্কিকে।
শুরুর ঝড় সামলে ধীরে ধীরে থিতু হওয়ার চেষ্টা করলেও বার্সার আক্রমণে বেশ চাপেই থাকতে হয়েছে জার্মান দলটিকে। ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায় বলার মতো কোনো আক্রমণে যায় ডর্টমুন্ড, যদিও তা বার্সাকে দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো ছিল না। হুটহাট কিছু প্রতি-আক্রমণ বাদ দিলে ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট ছিল বার্সার আক্রমণভাগ বনাম ডর্টমুন্ড রক্ষণের লড়াইয়ের। যেখানে বার্সার একের পর আক্রমণ অসাধারণভাবে ঠেকিয়েছে ডর্টমুন্ড রক্ষণ।
তবে এমন কোণঠাসা হয়ে থাকার খেসারত দিতেই হতো। সেটা ডর্টমুন্ড দিয়েছে ম্যাচের ২৫ মিনিটে। ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে গোল করেন রাফিনিয়া। তবে রাফিনিয়ার এই গোলের কারণে মন খারাপ হতে পারে ডিফেন্ডার পাউ কুবারসির। রাফিনিয়া পা না লাগালেও কুবারসির বাড়ানো বলটি জালে জড়িয়েই যেত। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পা লাগিয়ে টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা (১২) নিজের গোলের সংখ্যাটা আরেকটু বাড়িয়ে নেন।
গোল খেয়ে কিছুটা সম্বিৎ ফেরে ডর্টমুন্ডের। দু–একবার আক্রমণেও যায় তারা। ৩৬ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও আসে। কিন্তু অল্পের জন্য পাওয়া হয়নি গোল। ৪০ মিনিটে আবার কাছাকাছি গিয়ে গোলবঞ্চিত হয় ডর্টমুন্ড। অন্য দিকে গোল না পেলেও বার্সা নিজেদের আক্রমণের ধারা ধরে রাখে। তবে দ্বিতীয় গোলের অপেক্ষায় থেকে বিরতিতে যেতে হয় কাতালান ক্লাবটিকে।
বিরতির পর ব্যবধান বাড়াতে অবশ্য খুব বেশি সময় লাগেনি বার্সার। ইয়ামালের ক্রসে রাফিনিয়ার হেড লক্ষ্যে না থাকলেও আরেকটি হেডে ঠিকই সেই বলকে জালের পথ দেখান লেভা। দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে সামনে আসে বার্সা এবং আদায় করে নেয় আরও দুই গোল। ৬৬ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন লেভা। এটি চলতি মৌসুমে তাঁর ৪০তম গোল। এরপর দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করে দলের ৪-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেন ইয়ামাল।
১৫ এপ্রিল ডর্টমুন্ডের মাঠে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct