আপনজন ডেস্ক: ইতালিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন আইন পাশ করলেও তা ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক ও বিক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী জোট সরকারের এই সিদ্ধান্ত রাজধানী রোমজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজনা। একদিকে সরকার বলছে—নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়াতে এই পদক্ষেপ, অন্যদিকে বিরোধীরা একে দেখছে ‘শাস্তিমূলক জনতাবাদ’ হিসেবে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ইতালির মন্ত্রিসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পেয়েছে এই নতুন নিরাপত্তা বিল। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার শাস্তি বাড়ানো, অবৈধভাবে দখল করা সম্পত্তি দ্রুত খালি করা, প্রতারণার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বডি-ক্যামেরা পরার বাধ্যবাধকতার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিলটি গত দেড় বছর ধরে পার্লামেন্টে আলোচনায় ছিল।
বিলে আরও উল্লেখ রয়েছে—যারা রেলওয়ে বা মেট্রোর মতো গণপরিবহন ব্যবস্থায় কর্মরতদের ওপর সহিংসতা চালাবে, তাদের আজীবন সরকারি সেবা থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। পাশাপাশি, জলবায়ু আন্দোলনকারীরা যারা রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করেন, তাদের জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি গর্ভাবস্থাকে কারাদণ্ড এড়ানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করলেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। বিল পাশের পরপরই রোমের প্যানথিয়নের কাছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কাছাকাছি একদল বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। তারা মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা প্রতিহত করে। এতে উত্তেজনা বাড়ে এবং বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ছুড়লে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা রোমকে একপ্রকার অস্থির করে তোলে।
এই বিল এখনও চূড়ান্ত আইনে পরিণত হয়নি। এটি কার্যকর করতে হলে পার্লামেন্টের নিম্ন ও উচ্চকক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন। সরকার বলছে এটি একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার উদ্যোগ, কিন্তু সমালোচকদের আশঙ্কা—নিরাপত্তার নামে নাগরিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। এখন দেখার বিষয়, ইতালির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এই আইন কতটা নিশ্চিত করতে পারে এবং নাগরিকদের আস্থা কতটা অর্জন করে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct